২৮ গোল করা মোহামেদ সালাহর পয়েন্ট ৫৬। লিভারপুলের মিশরীয় তারকার চেয়ে এক পয়েন্ট বেশি ভিক্টর গিয়োকেরেসের, অথচ এ স্ট্রাইকার করেছেন মোহামেদ সালাহর চেয়ে ১০ গোল বেশি। ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটের পয়েন্ট বিন্যাসের কারণে স্পোর্টিং সিপির সুইডিশ স্ট্রাইকারকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মুখে পড়তে হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে পয়েন্ট বিন্যাসের চ্যালেঞ্জ জয় করে ভিক্টর গিয়োকেরেস কি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জিততে পারবেন; যেমনটা পেরেছিলেন নিকোস মাচলাস ও মারিও জার্দেল!
প্রথমে দেখে নেওয়া যাক ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটের পয়েন্ট বিন্যাস। মহাদেশের শীর্ষ পাঁচ লিগে খেলা ফুটবলাররা প্রতি গোলের জন্য ২ পয়েন্ট পেয়ে থাকেন। র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে ৬ থেকে ২২ নম্বর অবস্থানে থাকা লিগের খেলোয়াড়রা প্রতি গোলের জন্য ১.৫ পয়েন্ট করে পান। তার নিচে থাকা লিগের খেলোয়াড়রা পান গোলপ্রতি ১ পয়েন্ট করে।
পয়েন্ট বিন্যাসের কারণে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জয়ের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকেন শীর্ষ পাঁচ লিগের খেলোয়াড়রা। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে পয়েন্ট বিন্যাস ব্যবস্থা চালু করার পর থেকে শীর্ষ পাঁচ লিগের বাইরে খেলা মাত্র দুই ফুটবলার এ পুরস্কার জিতেছেন। তারা হলেন গ্রিসের ফরোয়ার্ড নিকোস মাচলাস এবং ব্রাজিলিয়ান মারিও জার্দেল। ৩৪ গোল করে নিকোস মাচলাস ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে এ পুরস্কার জিতেছেন ডাচ ক্লাব ভিতেসে আর্নহেমের হয়ে। শীর্ষ পাঁচ লিগের বাইরের কোনো ক্লাবের হয়ে একমাত্র খেলোয়াড় খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার পুরস্কার জিতেছেন মারিও জার্দেল। সাবেক ব্রাজিলিয়ান গোল মেশিন ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে এফসি পোর্তোর হয়ে এবং ২০০১-০২ মৌসুমে স্পোর্টিং সিপির হয়ে এ পুরস্কার জিতেছেন। সেই পর্তুগিজ লিগেই খেলা ভিক্টর গিয়োকেরেস কি অচলায়তন ভাঙতে পারবেন এবার! এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। কারণ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ লিগ এখনো চলছে।
১৯৬৭-৬৮ মৌসুম থেকে প্রবর্তন করা এ পুরস্কারে এখনো লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর আধিপত্য পরিষ্কার। মেসি সর্বাধিক ছয়বার পুরস্কার জিতেছেন, চারবার পুরস্কার জেতা রোনালদো আছেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। মারিও জার্দেল ছাড়া একাধিকবার পুরস্কার জিতেছেন রবার্ট লেভানডভস্কি, লুইস সুয়ারেজ, থিয়েরি অঁরি, গার্ড মুলার এবং দিয়েগো ফোরলান।
রোববার পর্যন্ত ভিক্টর গিয়োকেরেস এবং মোহামেদ সালাহ ছাড়াও পুরস্কার জয়ের দৌড়ে আছেন বেশ কয়েকজন ফুটবলার। তাদের অন্যতম ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে এ পুরস্কার পাওয়া রবার্ট লেভানডভস্কি। বার্সেলোনার হয়ে ২৫ গোল করেছেন পোল্যান্ডের বর্ষীয়ান এ স্ট্রাইকার। মুকুট পুনরুদ্ধারের পথটা এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি, ৫০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে আছেন লেভানডভস্কি। বুন্দেস লিগায় বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে শনিবার রাতে ৩৩তম রাউন্ডে নিজের ২৫তম গোল করা হ্যারি কেইন ৫০ পয়েন্ট নিয়ে লেভানডভস্কির সহাবস্থানে আছেন। গত মৌসুমে ৩৬ গোল করা ইংলিশ এ তারকা ৭২ পয়েন্ট নিয়ে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। তালিকার পরের স্থানগুলোতে আছেন লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২৪ গোল করা কিলিয়ান এমবাপ্পে (৪৮), ইতালিয়ান লিগে আটলান্টার হয়ে ২৪ গোল করা মাতেও রেতেগুই (৪৮), প্রিমিয়ার লিগে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের হয়ে ২৩ গোল করা আলেকজান্ডার ইসাক (৪৬), অস্ট্রিয়ান লিগের স্টর্ম গ্রাজ এবং ফরাসি লিগের এএস মোনাকোর হয়ে ২৪ গোল করা মিকা বিয়েথ (৪২.৫), ফরাসি লিগে পিএসজির হয়ে ২১ গোল করা উসমান দেম্বেলে (৪২), প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ২১ গোল করা আর্লিং হলান্ড (৪২) এবং ম্যানচেস্টার সিটি ও ফ্রাঙ্কফুর্টের হয়ে ২১ গোল করা ওমর মারমুশ (৪২)।