Homeদেশের গণমাধ্যমেভারতে পালানোর সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মৃত্যু 

ভারতে পালানোর সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মৃত্যু 


বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় মারা গেছেন। ভারতে প্রবেশের পর শুক্রবার (২৩ আগস্ট) মধ্যরাতে মেঘালয়ের শিলং পাহাড়ে উঠার সময় তার মৃত্যু হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পান্নার এক আত্নীয় তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পান্না বেশ কিছু দিন আত্মগোপনে থেকে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। সীমান্ত পার হয়ে শুক্রবার রাত ১২টায় মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এর একটি পাহাড়ে ওঠেন তিনি। পাহাড় পার হয়ে ওপারে যাওয়ার চেষ্টার সময় অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।

পান্নার মৃত্যু কীভাবে ঘটেছে, তা নিয়ে ভিন্ন তথ্য মিলেছে। কেউ কেউ বলছেন, পাহাড়ে ওঠার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে তিনি মারা যান।

পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এক সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল পান্নার। আওয়ামী লীগের ওই নেতা জানান, তিন দিন আগে পান্নার সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যমতে, বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন, সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন পান্না। ওপারে তার মৃত্যু হয়। সেটা গুলি নাকি হৃদরোগজনিত কারণে সেটা নিশ্চিত হতে পারেননি তারা। সীমান্তের ভারত প্রান্তের একটি থানায় তার মরদেহ রয়েছে।

পান্নার আপন ভাগ্নে ও কাউখালীর চিড়াপাড় সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েকুজ্জমান মিন্টু মুঠোফোন বলেন, ‘তার মৃত্যু সংবাদ শুনেছি। কীভাবে মারা গেছে, সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে তিনি সিলেটের পথে ভারতে গেছেন তা নিশ্চিত।’

তবে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, ভারতে পালানোর সময় পান্নার সঙ্গে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনও ছিলেন। পান্না যখন স্ট্রোক করেন, তখন ওই আওয়ামী লীগ নেতা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় বিএসএফের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে যান।

তবে ইসহাক আলী খান পান্না কীভাবে মারা গেছেন, সেই তথ্য কেউ নিশ্চিত করে বলতে না পারলে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। সেদিন তার পিরোজপুর শহরের পাড়েরহাট সড়কের বাড়িতে ভাংচুর ও আগুন দেয় দৃর্বৃত্তরা। পিরোজপুরের পৈত্রিক নিবাসে দ্বিতল ভবন করেছিলেন পান্না। সেখানে ভাঙচুর চলে। তার এক ভাই ওই বাড়িতে থাকলেও সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন।

ইসহাক আলী পান্না পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার চিড়াপারা পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের বেকুটিয়া গ্রামের হাজী নেছাব আলী খানের ছেলে। তবে গ্রামের বাড়িতে তার যাতায়াত তেমন নেই।

২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ইসহাক আলী পান্নার স্ত্রী আইরীন পারভীন বাঁধন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৪৫ বছর বয়সে মারা যান। আইরিন সরকারের উপ-সচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন্নাহার হলের ভিপি ছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর পান্না আর বিয়ে করেননি। এই দম্পতির ইফতেশাম আফতারি আরিয়ান নামক পুত্র সন্তান রয়েছে। তবে ওই সন্তান পালিত বলে জানা গেছে।

১৯৯৪ সালের সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ইসহাক আলী পান্না। ২০১২ সালের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক। তিনি পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ইসহাক আলী খান পান্না পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান পান্না। পরে ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচনের কারণে সরে যেতে হয় তাকে। পেশাগত জীবনে বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের চেয়ারমান ছিলেন সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা।

সিলেটের গোয়াইন ঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ হারুন অর রসিদ জানান, তার মৃত্যুর কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। 





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত