বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে, তত দেশের জন্য, মানুষের জন্য, অর্থনীতি ও রাজনীতির জন্য ভালো হবে। যেকোনও কথা বলে কেউ যদি নির্বাচন আড়াল করার চেষ্টা করে, বুঝতে হবে সে আর যা-ই হোক, জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না।
রবিবার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদ আয়োজিত জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসার দাবিতে অনুষ্ঠিত নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গত ২০ বছর ধরে এ দেশের মানুষ একটা ভোট দিতে পারেনি। নানা কথা বলে, উন্নয়নের কথা বলে, গণতন্ত্রের তথাকথিত শব্দ উচ্চারণ করে, কেউ ইসলামের কথা বলে মানুষের ভোটাধিকারকে রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমার দলও মনে করে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার অর্থই হচ্ছে গণতন্ত্রের স্বপক্ষে কাজ করা। ভালো কাজটা আগে করেন, খারাপ কাজটা বাদ দেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী একটি শক্তি। জার্মানির নাৎসিদের সঙ্গে তার তুলনা করা যায়। তাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কোনও স্থান হবে না, এর কোনও কারণ নাই। কেউ যদি এটা মেলাতে চান তারা তাদের মতো করে মেলাতে পারেন। কিন্তু তারা নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত হবে। তারা শুধু এক মাসের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত না, তারা গত ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণ যখন কাউকে প্রত্যাখ্যান করে, সেই প্রত্যাখ্যান কত নির্মম হয়, তা গত দুই মাসে দেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী দেখেছে। সে কারণে আগামী দিনে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার খুব সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে শামসুজ্জামান বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেছেন গণতন্ত্রের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। গণতন্ত্র এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি, গণতন্ত্র তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে যখন নির্বাচন হবে। আর নির্বাচনে কাকে ক্ষমতা আনবেন? আমি, আমার দল এবং এ দেশের গণতান্ত্রিক মানুষ মনে করে আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান। তাকে ঠেকানোর জন্য কোর্ট ব্যবহার করা হয়েছে, নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। তাকে ঠেকানোর জন্য মৃত্যুর মুখোমুখি করা হয়েছে কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি।
কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, কোনোভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে ঠেকানো বা বিভক্ত করা যাবে না। যে যা-ই বলুক না কেন, আগামী দিন গণতন্ত্রের দিন, বিএনপির দিন, ধানের শীষের দিন; খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের দিন। এই বিশ্বাসটাকে সামনে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের সভাপতি মোক্তার আখন্দের সভাপতিত্বে ও দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান প্রমুখ।