অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে সরকারের গঠিত ৬টি সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আরও ৯টি সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
সংলাপ শেষে শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এ কথা বলেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, আজ আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের আমরা নির্বাচন সংস্কারের কথা বলেছি। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলো ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা বলেছি প্রতিনিধিত্ব হারে আনুপাতিক পদ্ধতিতে ভোট হবে। সবার ভোটের অধিকার থাকবে। সরকার হবে জাতীয় সরকার। তারা আমাদের এই প্রস্তাবকে ভালোভাবে নিয়েছে। তারা বলেছে এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবে।
মুফতি রেজাউল করিম বলেন, আমরা বলেছি এই দেশ ৫ আগস্ট স্বাধীন হয়েছে বহু রক্ত ও জানের বিনিময়ে। জনগণের যে সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন আপনাদের কোনও দুর্বলতা নেই। তাহলে যারা খুনি, দেশের টাকাপাচারকারী, দুর্নীতিবাজ, তারা দেশ থেকে কীভাবে পালালো। এটা আমাদের বোধগম্য নয়। জাতি মানতে চায় না। এটায় আপনাদের দুবর্লতা প্রকাশ পায়। আপনাদের উচিত হবে খুনি, টাকাপাচারকারীদের আটকিয়ে শাস্তি নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, ওই স্বৈরাচার যারা নাকি খুনি, ফাসিস্ট তারা যেন নির্বাচন করার সুযোগ না পায় সেটা আমরা উপদেষ্টাদের বলেছি। এছাড়া আমরা ছয় কমিশন ছাড়া আরও ৯টি কমিশন গঠনের কথা বলেছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রস্তাবিত কমিশনগুলো হলো
১. আইন বিষয়ক সংস্কার কমিশন
২. নাগরিক সেবা বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৩. পররাষ্ট্র বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৪. শিক্ষা বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৫. বাকস্বাধীনতা বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৬. স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৭. শ্রমজীবী বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৮. সংখ্যালঘু ও নৃগোষ্ঠী বিষয়ক সংস্কার কমিশন
৯. মহিলা ও শিশু বিষয়ক সংস্কার কমিশন
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ করেন দলটির ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল। বাকিরা হলেন- দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, প্রেসিডিয়াম অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম ও সিনিয়র সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার দুই দফা সংলাপ হয়। এটি তৃতীয় দফা সংলাপ।
সংলাপের সূচি অনু্যায়ী, এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হওয়ার কথা। এর আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গে সংলাপ হয়।