একে তো জ্যৈষ্ঠের গরম, তার ওপর দৈনন্দিন কাজের চাপের শেষ নেই। এর মধ্যে চুলের ঠিকঠাক যত্ন নেওয়া না গেলে শুধু সৌন্দর্যহানিতেই ক্ষতিটা সীমাবদ্ধ থাকবে না। বর্তমানে কমবেশি সবাই চুল পড়া, চুলের স্বাভাবিক জৌলুশ ও মসৃণতা হারানোর সমস্যায় ভুগছেন। এর নেপথ্যে যত্নের অভাব, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি তো রয়েছেই, সঙ্গে খানিকটা ওষুধের প্রভাব, মানসিক চাপ—সবকিছুই সম্পৃক্ত। এই সময়ে কীভাবে চুলের দেখভাল করবেন, তা জানাচ্ছেন শোভন মেকওভারের স্বত্বাধিকারী কসমেটোলজিস্ট শোভন সাহা।
চুলের গোড়া মজবুত করতে
এক দিন পরপর মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পে নারকেল তেল ম্যাসাজ করুন। এই তেলে রয়েছে চুলের জন্য উপকারী বিভিন্ন ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলো চুলে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের গোড়া মজবুত করে। রাতের বেলা চুলে তেল দিতে পারেন। ঘুমানোর আগে হালকা গরম নারকেল তেল মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ও সেরাম লাগান। রোদে বের হলে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করুন।
খাদ্যতালিকায় নিয়মিত মাছ রাখুন। মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এটি চুলের বৃদ্ধি এবং গোড়া মজবুত করতে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
পেঁয়াজের রস চুল পড়া কমায়। এ ছাড়া এটি চুল গজাতে এবং চুলের গোড়া মজবুত করতে সহায়তা করে। তবে প্রত্যাশিত ফল পাওয়ার জন্য নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন নারকেল তেলের সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। তিন মাস ব্যবহারের পর ফলাফল চোখে পড়বে।
জেল্লা ফিরে পেতে
দুই-তিন মাস পরপর একবার চুলের ডগা ট্রিম করে নিন। চুলের দৈর্ঘ্য এবং অবস্থা অনুযায়ী এক বা দুই ইঞ্চি কেটে নিলেই চলবে।
অনেক সময় মাথার ত্বকে মরা কোষ জমে চুলের পুষ্টিতে বাধা দেয়। তাই এক মাস পরপর স্ক্যাল্প স্ক্রাবিং করা উচিত। মোটা দানার চিনি সামান্য অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। এতে মাথা অনেকটাই হালকা লাগবে এবং চুলও ঝরঝরে হয়ে উঠবে।
সপ্তাহান্তে অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে ডিপ ক্লিন ও চটজলদি জেল্লাদার করে তুলতে ভিনেগার বা চায়ের লিকার দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন।
ডিমের কুসুম চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে।
দুই চা-চামচ নারকেল তেল, ভিটামিন ই অয়েল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে দুটি ডিমের কুসুম এবং আধা কাপ মধু অথবা টক দই মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে নিন। আধা ঘণ্টা রাখার পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।
মসৃণতা ফিরে পেতে
চুল আগে মসৃণ ছিল, কিন্তু এখন বিভিন্ন কারণে রুক্ষ হয়ে পড়েছে। এ ধরনের সমস্যা হলে ধরে নিন পুষ্টির ঘাটতি হয়েছে। আবার জিনগত কারণেও অনেকের চুল রুক্ষ হয়ে থাকে। সমস্যা যা-ই হোক, নিজের চেষ্টা চালিয়ে যেতেই হবে। নিয়মিত ব্যবহারের জন্য মাইল্ড শ্যাম্পুতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। চুল ধোয়ার জন্য খুব ঠান্ডা বা গরম পানি ব্যবহার করবেন না।
দিনে অন্তত দুবার ভালো করে চুল আঁচড়ান। তাতে মাথার ত্বকে রক্তসঞ্চালন বাড়বে।
সপ্তাহে এক দিন পাকা কলা, আমন্ড বাটা এবং অল্প দুধ একসঙ্গে বেটে চুলে লাগিয়ে নিন। এতে চুল হারানো মসৃণতা ফিরে পাবে।