Homeঅর্থনীতিআরও ৫৮০০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন

আরও ৫৮০০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন

[ad_1]

নতুন করে আরও ৫২ প্রতিষ্ঠানকে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠান ৫ হাজার ৮০০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে পারবে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০-২০০ টন করে চাল রপ্তানি করতে পারবে। এ ব্যাপারে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রপ্তানিনীতি আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সব সময়ই চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ। তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ রয়েছে।

বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করেন, তাঁদের দিক থেকে আরও সুগন্ধি চালের চাহিদা রয়েছে। রপ্তানিকারকদের দিক থেকেও আবেদন পড়ে ছিল। তাই অনুমতি দেওয়া হলো।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল ১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৮ হাজার ১৫০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দুই দফা মিলিয়ে অনুমোদনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াল ২৩ হাজার ৯৫০ টন। আগের দফায় অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে বলা হয়েছিল। এবারের পরিপত্রে অবশ্য ৩০ নভেম্বরের মধ্যে চাল রপ্তানির নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সরকার চাইলে যেকোনো সময় অনুমতি বাতিল করতে পারবে।

এবার প্রতি কেজি চালের রপ্তানি মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ১২৩ টাকা ধরে হিসাব করলে ১ কেজি সুগন্ধি চালের দাম দাঁড়াবে ১৯৬ টাকা ৮০ পয়সা। গত এপ্রিলে অনুমতি দেওয়ার সময়ও প্রতি কেজি চালের রপ্তানি মূল্য ১ দশমিক ৬০ ডলারের কথা বলা হয়েছিল। তখন প্রতি ডলারের মূল্য ছিল ১২২ টাকা। তাতে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি কেজি চালের দাম পড়ে ১৯৫ টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে অনুমোদিত পরিমাণের বেশি চাল কেউ রপ্তানি করতে পারবে না। আর প্রতিটি চালান জাহাজীকরণ শেষে রপ্তানি-সংক্রান্ত সব কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। এই অনুমোদন কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয়। অর্থাৎ অনুমোদিত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নিজে রপ্তানি না করে অন্যের মাধ্যমে রপ্তানি করতে পারবে না, অর্থাৎ সাব-কন্ট্রাক্ট দেওয়া যাবে না।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে দেশের ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার আয় হয়েছিল। পরের ২০২০-২১ অর্থবছরে তা কমে হয় ২০ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এই আয় ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও কমে ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলারে নেমে আসে। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি স্থগিত রাখে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্তও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে গত জানুয়ারিতে সরকার আবার রপ্তানির অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অনুমতি নিলেও অনেকে রপ্তানি করতে পারেন না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু করে। প্রথম বছরে ৬৬৩ টন চাল রপ্তানি হয়। পরের বছরগুলোতে রপ্তানি বাড়তে থাকে, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে সুগন্ধি চাল উৎপাদিত হয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। প্রতিবছর গড়ে রপ্তানি হয় ১০ হাজার টন। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্য, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে এ চাল রপ্তানি করে আসছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চালের একটি তালিকা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসী মালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি।

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়—এ তিন দপ্তর জড়িত। জানা গেছে, সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে গেলে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সম্মতি নিতে হয়, এবারও তা নিতে হয়েছে। রপ্তানিকারকেরা বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দিলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যদি ফাইটোস্যানিটারি সনদ না দেয়, তাহলে কেউই সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে পারে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও দুই মাস পর খাদ্য মন্ত্রণালয় তা বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়। আর অক্টোবরে এসে কৃষি মন্ত্রণালয়ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়। তখন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, এসিআই ফুডস, প্রমি অ্যাগ্রো ফুডস, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজসহ ৩৩টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিপাকে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত