Homeঅর্থনীতিএ বছরই গরিব দেশগুলোকে শোধ করতে হবে ২২ বিলিয়ন ডলার

এ বছরই গরিব দেশগুলোকে শোধ করতে হবে ২২ বিলিয়ন ডলার

[ad_1]

বিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল দেশগুলো চীনের কাছে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ নিয়েছে। আর এসব ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে দেশগুলো খুব শিগগির এক ধরনে ‘টাইডাল ওয়েভ’ বা ব্যাপক ঢেউয়ের মুখে পড়তে চলেছে। আজ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বৈদেশিক নীতিবিষয়ক থিংক ট্যাংক লোয়ি ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষণ থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে বিশ্বের ৭৫টি দরিদ্রতম দেশকে ঋণ পরিশোধ বাবদ চীনকে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিতে হবে। এতে বলা হয়েছে, ‘এখন এবং এই দশকের বাকি সময়টায় চীন উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে ব্যাংকার হিসেবে নয়, বরং ঋণ সংগ্রাহক হিসেবেই কাজ করবে।’

এই ঋণ পরিশোধের চাপ দেশগুলোর স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য স্থানীয় তহবিলেও চাপ সৃষ্টি করছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ‘ঠিক যখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তখনই চীনের ঋণ দেওয়া কমে গেছে। এর ফলে দেশগুলো যখন এমনিতেই তীব্র অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে, তখন বড় অঙ্কের আর্থিক প্রবাহ চীনের দিকে চলে যাচ্ছে।’

এই ঋণগুলো মূলত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) কর্মসূচির আওতায় দেওয়া হয়েছিল। বিআরআই চীনের বৈশ্বিক অবকাঠামো বিনিয়োগ কর্মসূচি, যা স্কুল, সেতু, হাসপাতাল থেকে শুরু করে বড় সড়ক, নৌ ও বিমানবন্দর পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয় প্রকল্পের নিশ্চয়তা দিয়েছে।

এই ঋণ দেওয়ার প্রবণতা চীনকে এক সময় দ্বিপক্ষীয় ঋণের বৃহত্তম সরবরাহকারী হিসেবে পরিণত করেছিল। ২০১৬ সালে এর পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়, যা সব পশ্চিমা ঋণদাতাদের সম্মিলিত পরিমাণের চেয়েও বেশি ছিল। বিআরআই প্রাথমিকভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মনোযোগ দিয়েছিল, যেখানে সরকারগুলো বেসরকারি বা অন্যান্য রাষ্ট্র-সমর্থিত বিনিয়োগ পেতে হিমশিম খাচ্ছিল।

তবে এই চর্চা চীনের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে এবং বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা ঋণগ্রহীতা দেশগুলোকে ঋণের ফাঁদে ফেলছে। গত মাসে লোয়ি ইনস্টিটিউটের আরেক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, লাওস এখন গুরুতর ঋণ সংকটে জর্জরিত। এর একটি কারণ হলো—অভ্যন্তরীণ জ্বালানি খাতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ, যার বেশির ভাগই চীনের অর্থায়নে হয়েছে।

চীনের সরকার অবশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণের ফাঁদ তৈরির অভিযোগ অস্বীকার করে। ঋণগ্রহীতা দেশগুলোও পাল্টা দাবি করেছে যে, চীন একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার এবং অন্যরা ঋণ দিতে অস্বীকার করলে চীন গুরুত্বপূর্ণ ঋণ দিয়েছে। তবে লোয়ি ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের কাছে এখন যে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ বকেয়া পড়েছে, তা ‘রাজনৈতিক সুবিধা’ আদায়ে ব্যবহার করা হতে পারে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশি সহায়তা ব্যাপক হারে কমানোর মধ্যেই এটি ঘটছে।

প্রতিবেদনে হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, বুরকিনা ফাসো এবং ডোমিনিকান রিপাবলিককে দেওয়া নতুন বড় আকারের ঋণের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এই সব দেশ তাইওয়ানের পরিবর্তে চীনকে মূল রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেওয়ার পর ১৮ মাসের মধ্যেই এসব ঋণ পেয়েছে।

চীন অবশ্য এখনো পাকিস্তান, কাজাখস্তান, লাওস এবং মঙ্গোলিয়ার মতো কিছু কৌশলগত অংশীদারদের পাশাপাশি আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ধাতু উৎপাদনকারী দেশগুলোতে অর্থায়ন অব্যাহত রেখেছে। তবে এই পরিস্থিতি চীনকেও বেকায়দায় ফেলেছে। দুর্বল দেশগুলোতে অস্থিতিশীল ঋণ পুনর্গঠনের জন্য কূটনৈতিক চাপ এবং চীনের নিজস্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে ঋণ ফিরিয়ে আনার জন্য অভ্যন্তরীণ চাপ, এই দুইয়ের মাঝে পড়েছে চীন।

চীন বিআরআই প্রকল্প সম্পর্কে খুব কমই তথ্য-উপাত্তই প্রকাশ করে। লোয়ি ইনস্টিটিউট বলেছে, তাদের অনুমান, সম্ভবত চীন তাদের দেওয়া ঋণের সম্পূর্ণ পরিমাণকে কম করে দেখিয়েছে। ২০২১ সালে এইডডেটা অনুমান করেছিল যে, চীনের ‘লুকিয়ে দেওয়া ঋণের’ পরিমাণ প্রায় ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত