উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ, ইঞ্জিন এবং ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত কর অব্যাহতির দাবি জানিয়েছে দেশের বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এওএবি)। সংগঠনটি বলছে, আমদানি পর্যায়ে ১ শতাংশ শুল্ক ও ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের জন্য ক্রমেই বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জেট ফুয়েলের ওপরও রয়েছে একাধিক স্তরের শুল্ক ও কর, যা কমিয়ে আনা না গেলে বিমান সংস্থাগুলোর ব্যবসায়িকভাবে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে প্রাক্-বাজেট আলোচনায় এওএবি নেতারা এসব দাবি তুলে ধরেন। সংগঠনটির সেক্রেটারি জেনারেল ও নভোএয়ারের এমডি মফিজুর রহমান বলেন, ‘বিমানের যন্ত্রাংশ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এ খাতে বর্তমানে ১ শতাংশ সিডি (শুল্ক) ও ৫ শতাংশ এআইটি রয়েছে। জেট ফুয়েলের ওপরও রয়েছে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর এবং ৫ শতাংশ আগাম কর। আমরা এগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি।’
মফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘এভিয়েশন একটি মূলধননির্ভর খাত হলেও এর পরিচালনা ব্যয় অত্যন্ত বেশি। ফলে দেশের এয়ারলাইনসগুলো প্রায়ই লোকসানে পড়ে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে এনবিআরের নজরে এনেছি। এনবিআর চেয়ারম্যান করসংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
এনবিআরের সঙ্গে এই প্রাক্-বাজেট আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এওএবির ট্রেজারার জহির উদ্দিন মামুন, নির্বাহী পরিচালক বদরুল হাসান, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানসহ সংগঠনের অন্যান্য প্রতিনিধি।
ভ্যাট কমানোর পক্ষে মিষ্টির ব্যবসায়ীরা, বিপক্ষে এনবিআর
একই দিন আলোচনায় মিষ্টি বিক্রিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সুইটস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির দাবি, ভ্যাট হার কমালে রাজস্ব আদায় বাড়বে। মহাসচিব ননী গোপাল ঘোষ বলেন, ‘মিষ্টির ওপর যখন সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট ছিল, তখন রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছিল। বর্তমানে ১০ শতাংশ হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ভ্যাট পরিহার করছেন।’ তবে এ দাবির বিপরীতে সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই বহু মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনেছি—কিন্তু কোথাও রিসিট পাইনি। তারা ইএফডি ব্যবহার করেন না। আপনি বলছেন, ফ্রি করলে রাজস্ব বাড়বে, এটা একটা আজগুবি যুক্তি।’
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, এখন থেকে মিষ্টিতে ভ্যাট ‘ইনক্লুসিভ’ করা হবে, যাতে আলাদাভাবে ভ্যাট উল্লেখ না থাকলেও সেটি দামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে। সুপারশপের মতোই পুরো মূল্যের ওপর ভ্যাট নির্ধারিত হবে।