Homeঅর্থনীতিদুধ-মাংসে জেনেটিক বিপ্লব

দুধ-মাংসে জেনেটিক বিপ্লব

[ad_1]

দেশজ পুষ্টির নিরাপত্তা এবং প্রাণিজ আমিষে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার ‘প্রুভেন বুল’ তৈরির মাধ্যমে একটি টেকসই ও বৈজ্ঞানিক প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কাঠামো গড়তে যাচ্ছে। পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের আওতায় খামারিনির্ভর কৃত্রিম প্রজননব্যবস্থায় উচ্চমানের বুল তৈরির মাধ্যমে দুধ ও মাংস উৎপাদন বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করা হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিকল্পিত প্রজননের নতুন এক ধারা চালু করতে চায় সরকার। এখন আর শুধু পশুপালনের সংখ্যা বৃদ্ধিই লক্ষ্য নয়; বরং উৎপাদনশীলতা, জেনেটিক মান এবং বাজারের চাহিদা বিবেচনায় নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে উন্নত গাভি প্রজাতি গড়ে তোলাই এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন বিভাগের ১৮ জেলার ৯৩ উপজেলায় খামারিদের মধ্যে ১১ হাজার ৬৬৫ জনকে বাছাই করা হবে। তাঁদের দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় টিকা, ওষুধ ও প্রাণিখাদ্য। পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে সংগ্রহ করা হবে ৪০০টি বুলকাফ, যেগুলোর মধ্য থেকে ২০০টি ‘ক্যান্ডিডেট বুল’ নির্বাচন করা হবে। এই বুলদের সিমেন দিয়ে নির্বাচিত খামারিদের গাভি ও বকনাগুলোর কৃত্রিম প্রজনন করা হবে। পরবর্তী প্রজন্মের দুধ ও মাংস উৎপাদনের তথ্য সংগ্রহের ভিত্তিতে নিশ্চিত করা হবে ‘প্রুভেন বুল’ তৈরি।

উৎপাদনে নয়, মানে গুরুত্ব

বর্তমানে দেশে প্রতিবছর গড়ে ১ কোটি ৬৮ লাখ ডোজ গরুর সিমেনের চাহিদা থাকলেও সরকারি পর্যায়ে উৎপাদন হয় মাত্র ৫০ শতাংশ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন সত্ত্বেও মানের নিশ্চয়তা, নিয়ন্ত্রিত প্রজনন ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসের ঝুঁকি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। এই বাস্তবতায় উচ্চ জেনেটিক মেরিটসম্পন্ন ব্রিডিং বুল নির্বাচনের উদ্যোগ কেবল উৎপাদনের অঙ্ক বাড়ানো নয়, বরং ভবিষ্যতের পশুসম্পদকে আরও টেকসই, পরিকল্পিত ও বিজ্ঞানসম্মত পথে পরিচালনার একটি জাতীয় রূপরেখা।

‘প্রুভেন’ ভাবনার পেছনে যে বাস্তবতা

গবেষণা বলছে, গ্রামীণ পর্যায়ে কিছু সংকর জাতের গাভি এখন প্রতিদিন ২৫-৩০ লিটার পর্যন্ত দুধ দিচ্ছে। কিন্তু অপরিকল্পিত প্রজননের কারণে উচ্চ উৎপাদনশীল ওই গাভিগুলোর পরবর্তী প্রজন্মে জেনেটিক দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে। এই ঝুঁকি কমিয়ে এনে একটি সুসংহত ও প্রমাণভিত্তিক প্রজননব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সেই প্রজাতিগুলোর ভবিষ্যৎ ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করাই প্রুভেন বুল প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।

এসডিএসডি

পুষ্টি ও কর্মসংস্থান—দুই দিকেই সুফল

জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ বিষয়ে বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল দুধ-মাংস উৎপাদনই বাড়াবে না, বরং গ্রামীণ পর্যায়ে উদ্যোক্তা তৈরি, প্রাণিসম্পদ খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাতীয় পুষ্টি সূচকে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।’

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এটি পুষ্টিনিরাপত্তা ও খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস ও জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব অবদান রাখবে।’

প্রকল্পে যেসব গাভি ও বকনা কৃত্রিম প্রজননের জন্য ব্যবহৃত হবে, সেগুলো থেকে পাওয়া নতুন প্রজন্মের বকনা-বুলকাফগুলোকে আরও গবেষণার আওতায় এনে দীর্ঘমেয়াদি জেনেটিক রেকর্ড সংরক্ষণের পরিকল্পনাও রয়েছে।

ভবিষ্যতের খামার এখন পরিকল্পনার গর্ভে

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. বয়জার রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি গাভি প্রজন্ম তৈরি করা, যারা কম খরচে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যে উচ্চমানের দুধ ও মাংস দিতে পারবে। প্রুভেন বুল এই প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে।’



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত