বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) নতুন শাখা খোলা, স্থানান্তর, একীভূতকরণ ও ইজারা সংক্রান্ত কার্যক্রমে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে একটি পূর্ণাঙ্গ ও কঠোর নীতিমালা জারি করেছে। রবিবার (১৮ মে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যবসা সম্প্রসারণ সংক্রান্ত যেকোনও সিদ্ধান্তের আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। অনুমোদনের পর তা বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুমোদন দিলেই কেবল এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা যাবে। তবে পর্ষদের কোনও সদস্য ঋণখেলাপি কিংবা দণ্ডিত হলে শাখা অনুমোদন বাতিল হবে।
নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, শাখা অনুমোদনের জন্য আবেদনকারীর আর্থিক সক্ষমতা, মূলধন পর্যাপ্ততা, খেলাপি ঋণের হার, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদন, ক্যামেলস রেটিং এবং আমানতকারীদের সেবার মানসহ নানা বিষয় মূল্যায়ন করা হবে। অনুমোদনের তিন মাসের মধ্যে শাখা কার্যক্রম শুরু না হলে অনুমতিপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে বিবেচিত হবে।
এছাড়া বিদ্যমান শাখা ও উপশাখার একীভূতকরণ, রূপান্তর কিংবা বন্ধ করার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
শাখা স্থাপনের আবেদনের সঙ্গে তিন বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী, আয়-ব্যয়ের হিসাব, প্রস্তাবিত ভাড়ার স্থান ও পরিমাণ এবং প্রমাণ দিতে হবে যে ভাড়াকৃত সম্পত্তির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বা তাদের নিকটাত্মীয়দের কোনও স্বার্থ নেই। এ ছাড়া পরিচালকদের বিরুদ্ধে কোনও ঋণখেলাপি মামলা নেই ও তারা দণ্ডিত নন—এ মর্মে ঘোষণাপত্রও জমা দিতে হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে শাখা স্থাপনের অনুপাত ১:২ বজায় রাখতে হবে। প্রতিটি শাখার সর্বোচ্চ আয়তন নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০০ বর্গফুট এবং প্রতিবার ফ্লোর স্পেসের ডেকোরেশন খরচ প্রতি বর্গফুটে ২০০০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে, এই নতুন নীতিমালা বাস্তবায়নের ফলে এনবিএফআই খাতে শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে এবং পেশাদার ও দক্ষ জনবল নিয়োগের পথ সুগম হবে।