Homeঅর্থনীতিবাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে যেখানে অনন্য ইউএস-বাংলা

বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে যেখানে অনন্য ইউএস-বাংলা


সুচিন্তিত পরিকল্পনা ছাড়া এভিয়েশনে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানো অসম্ভব। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে বাংলাদেশের এভিয়েশনে জ্বলজ্বল করছে দেশের আকাশ পরিবহনের অন্যতম ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে ইউএস-বাংলা পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ্য যত দূরেই থাকুক, সঠিক পরিকল্পনায় সেই লক্ষ্যকে নিজস্ব দৃষ্টিসীমায় নিয়ে আসাই সঠিক ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই যাত্রা শুরু করার আগে দেশের এভিয়েশনে যাত্রীসেবাকে প্রাধান্য দিয়ে প্রায় ১৫ মিলিয়ন প্রবাসী বাংলাদেশির জন্য আধুনিক এয়ারক্রাফট, প্রতিযোগিতামূলক ভাড়া, উন্নত ইন-ফ্লাইট সার্ভিসসহ সব ধরনের সেবার সম্মিলন ঘটিয়েছে।

যাত্রার শুরুতে পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের সব বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালানো, যা এক বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন করেছে ইউএস-বাংলা। লক্ষ্য যখন দূর দিগন্তে, সেখানে ইউএস-বাংলা থেমে যায়নি। দুই বছরের মধ্যেই ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গমন করে।

ধীরে ধীরে ইউএস-বাংলা ইনফ্যান্ট থেকে চাইল্ডে রূপান্তরিত হয়েছে, তখন স্বপ্নগুলো আরও বড় দেখতে শুরু করেছে। তৃতীয় বছরেই বহরে যোগ করেছে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট, যার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম মাস্কাট, দোহাসহ এশিয়ার অন্যতম গন্তব্য সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া যাত্রী চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কলকাতা ও বাংলাদেশি যাত্রী যাঁরা চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য ভারতে যান, তাঁদের অনেকের অন্যতম গন্তব্য চেন্নাইয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশি কোনো এয়ারলাইনস হিসেবে চীনের কোনো প্রদেশে ফ্লাইট পরিচালনায় প্রথমবারের মতো স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে ইউএস-বাংলা। বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, পর্যটক ও চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য চীনের গুয়াংজুতে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করছে, যা বাংলাদেশের এভিয়েশনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ধারাবাহিকভাবে ইউএস-বাংলা দেশীয় পর্যটক ও চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির সুবিধা হিসেবে ঢাকা থেকে ব্যাংককে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

কোভিডকালে সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে বিস্তৃত আকাশসীমাকে নিজেদের করে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশি যাত্রীদের অন্যতম গন্তব্য আরব আমিরাতের দুবাই ও সার্কের অন্তর্ভুক্ত মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা। মালেতে দেড় লক্ষাধিক বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। কোভিড-পরবর্তীকালে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য আরব আমিরাতের শারজাহ, আবুধাবিতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতি মুহূর্তে বাংলাদেশি যাত্রীদের কাছে ইউএস-বাংলা অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতিযোগিতামূলক ভাড়ায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশি যাত্রীরা দেশীয় আতিথেয়তায় ভ্রমণ করতে পারছেন ইউএস-বাংলায়।

বাংলাদেশি তথা বিশ্বের সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানের আবেগের জায়গা সৌদি আরবের অত্যন্ত জনপ্রিয় জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করেছে ২০২৪ সালের ১ আগস্ট। লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান কাজের প্রয়োজনে কিংবা ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে ইউএস-বাংলার সেবা নিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইউএস-বাংলা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।

এভিয়েশন ব্যবসায় নিজেকে গুটিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই। মুক্ত আকাশে এভিয়েশন ব্যবসাটা সত্যিকার অর্থেই মুক্ত। মুক্ত অর্থনীতিতে একটি এয়ারলাইনসকে প্রতিনিয়ত নানাবিধ প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েই এগিয়ে যেতে হবে। দেশের এভিয়েশনে ইউএস-বাংলা একটি সেরা এয়ারলাইনস। নিকট ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়াসহ এশিয়ার অন্যতম সেরা এয়ারলাইনস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে ইউএস-বাংলা।

বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিমানবহরে ৪৩৬ আসনের দুটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট আছে ৯টি, যাদের আসনসংখ্যা ১৮৯। মোট বহরে এয়ারক্রাফট আছে ২৪টি। এয়ারক্রাফট সংখ্যার দিক থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস দেশের সর্ববৃহৎ বিমান সংস্থা। চলতি বছর বহরে আরও দুটি বৃহৎ আকারের এয়ারক্রাফট যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খুব শিগগির ঢাকা থেকে মদিনা, দাম্মাম, ২০২৬ সালের মধ্যে ইউরোপের গন্তব্য লন্ডন, রোম এবং ২০২৮ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে টরন্টো, নিউইয়র্ক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য কাজ করছে ইউএস-বাংলা।

প্রথম ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের এয়ারক্রাফটগুলোর গড় বয়স প্রায় ১০ বছর। ভবিষ্যতে নতুন নতুন রুট, নতুন নতুন এয়ারক্রাফটকে যুক্ত করে এয়ারলাইনসকে আরও সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা করছে ইউএস-বাংলা।

সুন্দর ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা যেকোনো উদ্দেশ্যকে সঠিক বাস্তবায়নের দিকে ধাবিত করে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস বাংলাদেশ এভিয়েশনশিল্পে তেমনি একটি বিমান সংস্থা, যা ভবিষ্যতে সঠিক পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ এভিয়েশন সেক্টরকে আরও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবে।

লেখক: মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত