[ad_1]
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য বিস্কুট ও ব্রেডে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আরোপের সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএবিবিএমএ)। সংগঠনটি বলছে, প্রস্তাবিত বাজেট প্রস্তাব সংশোধন করে এই ভ্যাট পুনরায় ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা না হলে এই শিল্প চরম আর্থিক সংকটে পড়বে, যার প্রভাব পড়বে সরাসরি সাধারণ মানুষের খাদ্যাভ্যাসে।
বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর দিলকুশায় জীবন বীমা টাওয়ারে সংগঠনটির নতুন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরা হয়।
সংগঠনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘বিস্কুট ও ব্রেড এ দেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অথচ এবারের বাজেটে এই শিল্পের জন্য কোনও সুস্পষ্ট নীতিগত সহায়তা রাখা হয়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের ২০ মার্চ এফবিসিসিআইয়ের মাধ্যমে সরকারের কাছে বাজেট প্রস্তাব জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই প্রস্তাবনাগুলোর কোনোটি বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। উল্টো ৯ জানুয়ারি ঘোষিত অধ্যাদেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। পরে শুধুমাত্র বিস্কুটের ক্ষেত্রে তা কমিয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হলেও ব্রেডসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যে সেই হার বহাল থাকে।’
শফিকুর রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘বর্তমান হারে ভ্যাট আরোপ অব্যাহত থাকলে উৎপাদন খরচ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে, যার পরিণতিতে বিক্রয়মূল্য বাড়বে এবং দরিদ্র ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর নাগালের বাইরে চলে যাবে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য।’
কৃষিভিত্তিক শিল্পের প্রতি সরকারের অবহেলা?
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন কৃষি উদ্যোক্তা ও সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশের ৪৫ শতাংশ শ্রমশক্তি সরাসরি কৃষির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু জাতীয় আয়ে এই খাতের অবদান মাত্র ১১ থেকে ১২ শতাংশ। কৃষির প্রকৃত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক শিল্পায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিস্কুট ও ব্রেড শিল্প সরাসরি কৃষকের উৎপাদিত ফসল প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করে। এর ফলে কৃষকের পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি হয় এবং কর্মসংস্থান তৈরি হয়। কিন্তু বাজেটে এই শিল্পকে স্বীকৃতি না দেওয়া এক ধরনের বৈষম্য।’
নীতিমালার বাস্তবায়নে বিলম্ব
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জাইকার সহায়তায় সরকার কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ নীতিমালা গ্রহণ করলেও বাস্তবে তার বাস্তবায়ন হয়নি। এই নীতিমালায় মাত্র ৫ শতাংশ সুদে শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের কথা থাকলেও এখনও তা কার্যকর হয়নি, যা শিল্প উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংগঠনের সুপারিশ
সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারকে ৩টি সুপারিশ করা হয়:
১. বিস্কুটের ওপর ভ্যাট পুনরায় ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা
২. ব্রেডসহ অন্যান্য কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ওপর বর্তমান ভ্যাট হার হ্রাস
৩. বাজেট পূর্ব জমা দেওয়া প্রস্তাবনাগুলো পূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে বাজেট সংশোধন।
সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘এই শিল্প কেবল খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত নয়, এটি কর্মসংস্থান, কৃষি উন্নয়ন ও দারিদ্র্য নিরসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সরকারকে এখনই বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নিতে হবে, অন্যথায় সংকটে পড়বে পুরো শিল্পখাত।’
[ad_2]
Source link