Homeঅর্থনীতিবেড়েছে পেঁয়াজের দাম, সবজিও ঊর্ধ্বমুখী

বেড়েছে পেঁয়াজের দাম, সবজিও ঊর্ধ্বমুখী

[ad_1]

বাজারে কিছুদিন ধরে সব ধরনের সবজির দাম বাড়ছে। গেলো রমজান মাসজুড়ে সবজির দাম কম থাকায় ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতে পেরেছেন। তবে ঈদের পর থেকে সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে। এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় বর্তমান বাজারের চিত্র।

পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে ছোট ও বড় আকারের দেশি পেঁয়াজ আলাদা দামে বিক্রি হলেও আজ একই দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে আকার অনুযায়ী ক্রস জাতের পেঁয়াজের দামের ভিন্নতা রয়েছে।

আজ বাজারে মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন ক্রস পেঁয়াজ ৫৫-৬০ টাকা। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৫৫ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। এছাড়া আজ প্রতি কেজি সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, লাল আলু ২৫ টাকায়। বগুড়ার আলু ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নতুন দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ভারতীয় আদা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, আজ লাল আলুর দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। প্রতি কেজিতে ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা। নতুন দেশি রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা, চায়না ও ভারতীয় আদার দামও বেড়েছে ২০ টাকা করে। তবে চায়না রসুনের দাম ২০ টাকা কমেছে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

পেঁয়াজ

পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে এক বিক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম যেই বাড়াক, সিন্ডিকেট হোক আর চাষিই হোক; আরও বাড়ালে ভুল করবে। কারণ আরও দাম বাড়লে তখন সরকার আমদানি করবে।

বিক্রেতা মো. হান্নান বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ৮০ টাকা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

কেন এভাবে দাম বাড়ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা রাখি পেঁয়াজ, দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। তাই দাম বাড়ছে। এটা সংরক্ষণ করে সারা বছর বিক্রি করা হবে। কিছুদিন আগে যে পেঁয়াজ বাজারে ছিল সেটা রেখে বিক্রি করা যেতো না, পঁচে যেতো। ওগুলো সব বিক্রি করে এখন এগুলোর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

মো. আনোয়ার হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, এটাতো আমাদের দেশের পেঁয়াজ, এটা ৮০ কেজি খেলেই কি? দেশের টাকাতো দেশেই থাকবে। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ যদি দেড়শ’ টাকা দিয়ে আমরা কিনে খেতে পারি তাহলে দেশি পেঁয়াজ খেতে সমস্যা কি!

এদিকে বাজার করতে আসা সায়েদুর রহমান বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে ১৫-২০ টাকা বেড়ে যাওয়াটা বেশি। মনে হচ্ছে যে লাফ দিয়ে দাম বেড়ে গেলো।

আরেক ক্রেতা আফসার হোসেন বলেন, এখনই যদি সরকার পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না আনতে পারে তাহলে কিন্তু আগের মতোই অবস্থা হবে। আবার আমাদের একশ’-দেড়শ’ টাকায় পেঁয়াজ কিনে খেতে হবে।

সবজির দাম বেশি

গত সপ্তাহের থেকে আজ কিছু কিছু সবজির দাম সামান্য কমলেও এখনও সবজির দাম বাড়তিই রয়েছে। এছাড়া নতুন করে বেড়েছে কয়েকটি সবজির দাম।

আজ বাজারে প্রতি কেজি টক টমেটো ৬০ টাকা, দেশি গাজর ৪০-৫০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৭০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০ টাকা, শসা ৫০ (হাইব্রিড), ১২০ (দেশি) টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১০০-১২০ টাকা, পেঁপে ৭০ টাকা, মূলা ৬০-৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, সজনে ১৪০ টাকা, পটল ৭০  টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ১২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি  বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।

সবজির বাজার

এ ক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় আজ প্রতি কেজিতে টক টমেটোর দাম কমেছে ১০ টাকা, লম্বা বেগুনের দাম কমেছে ১০ টাকা, সাদা গোল বেগুনের দাম কমেছে ১০ টাকা, কাঁকরোলের দাম কমেছে ৪০ টাকা, ঢেঁড়সের দাম কমেছে ২০ টাকা, পটলের দাম কমেছে ১০-২০ টাকা, চিচিঙ্গার দাম কমেছে ১০ টাকা, ধুন্দলের দাম কমেছে ১০-২০ টাকা, ঝিঙার দাম কমেছে ২০ টাকা, বরবটির দাম কমেছে ১০ টাকা। আর প্রতি পিসে বাঁধাকপির দাম কমেছে ১০ টাকা।

এছাড়া প্রতি কেজিতে দেশি শসার দাম বেড়েছে ৪০ টাকা, সজনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। আর হালিতে কাঁচা কলার দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

সবজি বিক্রেতা মো. রাজিব বলেন, কাঁচামালের দাম আসলে নিয়মিতই বাড়ে-কমে। আজ বাড়ে তো কালকে কমে। এভাবে চলছে। সবজির দামতো রোদ বৃষ্টির কারণেও বাড়ে কমে।

বাড়ছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিম দাম

আজ বাজারে কিছুটা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। তবে ব্রয়লার মুরগি ছাড়া অন্যান্য মুরগির দাম কমেছে।

আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আজ ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯৫ টাকা, কক মুরগি ২৩৫-২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০-৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৬২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১১৫-১২০ টাকা, সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকায়।

এ ক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা। আর প্রতি ডজনে মুরগির লাল ডিমের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা করে।

এছাড়া প্রতি কেজিতে কক মুরগির দাম ১০-২০ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম ১০ টাকা এবং দেশি মুরগির দাম ১০ টাকা কমেছে। গরু ও খাসির মাংস এবং মুরগির সাদা ডিমের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

ব্রয়লার মুরগি ছাড়া অন্যান্য মুরগির দাম কমেছে

ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তি থাকা নিয়ে আতিফা চিকেন হাউজের বিক্রেতা বলেন, এটা কাচাঁমাল তাই দাম কমে-বাড়ে। আজ বেশি তো কাল আবার কম।

এদিকে আজ বাজারে আকার, ওজন ও মান অনুযায়ী ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজর ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার ৮০০ টাকা, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া অন্যান্য মাছে মধ্যে রুই ৩৫০-৫০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৫০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ১০০০-১ হাজার ৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কৈ মাছ (চাষের) ২৫০-৩০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-১ হাজার ২০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা, শোল ৭০০-১০০০ টাকা, চিতল ৬০০-১০০০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০-৪০০ টাকা, কাজলী মাছ ১ হাজার ৩০০-১ হাজার ৫০০ টাকা, বাতাসি মাছ ১ হাজার ৩০০-১ হাজার ৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুদি দোকানের পণ্যের দাম অপরিবর্তিত

নতুন দাম নির্ধারণের পরে আজ প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৯ টাকায়, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬৯ টাকা। এছাড়া আজ মুদি দোকানের অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।

মুদি দোকান

আজ বাজারে প্রতি কেজি ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১০০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, মাশকালাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, কাজু বাদাম ১ হাজার ৬৫০ টাকা, পেস্তা বাদাম ২ হাজার ৭০০ টাকা, কাঠ বাদাম ১২২০ টাকা, কিসমিস ৬০০-৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫২০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ১ হাজার ৩০০ টাকা, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার ৬০০ টাকা, জিরা ৬০০ টাকা, প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিকেজি প্যাকেটজাত চিনি ১২০ টাকা, খোলা চিনি ১১৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ছবি: প্রতিবেদক



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত