তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) ভারতীয় ভোগ্যপণ্য জায়ান্ট আইটিসি-তে থাকা ২ দশমিক ৩ শতাংশ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে।
ব্লক ট্রেড বা এককালীন বড় অঙ্কের এই লেনদেনের মাধ্যমে প্রায় ১৪০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার) সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিএটি। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক আর্থিক পূর্বাভাসও আলোচনায় এসেছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিএটি এই ঘোষণা দেয়। শেয়ার বিক্রির পরও আইটিসি-তে ২৩ দশমিক ১ শতাংশ অংশীদারত্ব নিয়ে বিএটি ভারতীয় এই কনগ্লোমারেটের বৃহত্তম বিনিয়োগকারী হিসেবেই থাকবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় বিএটি ২৯ কোটি পর্যন্ত শেয়ার বিক্রি করবে, যার ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি শেয়ার ৪০০ রুপি। এই মূল্য শেয়ারবাজারে গত সোমবারের সমাপনী মূল্যের চেয়ে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ কম। গোল্ডম্যান স্যাক্স এবং সিটিগ্রুপ এই চুক্তি সম্পাদনে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে ভারতে এটি দ্বিতীয় বড় ব্লক ট্রেড। এর আগে ইনডিগো এয়ারলাইনসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাকেশ গাঙ্গওয়াল এই সাশ্রয়ী বিমান সংস্থার ১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেন।
বিএটি জানিয়েছে, এই লেনদেন থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তারা ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত ১ দশমিক ১ বিলিয়ন পাউন্ডের (প্রায় ১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার) শেয়ার বাইব্যাক কর্মসূচি আরও ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড বাড়াবে। এই লেনদেন তাদের বার্ষিক আয়ের পূর্বাভাসের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেই আশা করছে বিএটি।
গত বছরও লন্ডন-ভিত্তিক এই সিগারেট প্রস্তুতকারক সংস্থাটি আইটিসি-এর প্রায় ৪৩৬ দশমিক ৯ মিলিয়ন শেয়ার (মোট শেয়ারের প্রায় ৩.৫ শতাংশ) প্রায় ২০০ কোটি ডলারে বিক্রি করে, যা ছিল ভারতের ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম ব্লক ডিল। ডানহিল এবং লাকি স্ট্রাইকের মতো ব্র্যান্ডের মালিক বিএটি।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে বিএটি বার্ষিক রাজস্বে মাত্র ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। এর অন্যতম কারণ হিসেবে বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ায় কর সংক্রান্ত প্রতিকূল পরিস্থিতি বা ‘ট্যাক্স হেডউইন্ডস’-এর কথা উল্লেখ করেছিল তারা। ফলে, আইটিসি-তে অংশীদারত্ব বিক্রির এই পদক্ষেপকে অনেকে বিএটির পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতিতে নিজেদের আর্থিক কৌশল সমন্বয়ের অংশ হিসেবে দেখছেন।
গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও সংস্থাটি বলেছে, এই ধরনের লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা এখনো নেই।