পাকিস্তানে ভারতের হামলার ঘটনার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। এই আতঙ্কের কারণে আজ বুধবার বড় ধরনের দরপতন দেখা দিয়েছে শেয়ারবাজারে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুপুর ১টায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে দরপতন হয় ৩৭৭টির, দর বাড়ে কেবল ৯টির এবং আগের দরে লেনদেন হয় ৭টির। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১১৬ পয়েন্ট। এই সময়ে লেনদেন হয়েছে ৩৫৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
শেয়ারবাজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পাকিস্তানে ভারত হামলা চালানোর ঘটনায় দেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই আতঙ্কের কারণেই লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে।
তাঁরা আরও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এই উপমহাদেশে আতঙ্ক ছড়াবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আগে থেকেই পতনের ধারায় থাকা দেশের শেয়ারবাজার এখন তলানিতে রয়েছে। এখান থেকে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত না হয়ে স্বাভাবিক আচরণ করা উচিত। তাহলে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
দুই সপ্তাহ আগে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের কমপক্ষে ৯ স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তারাও কাশ্মীরের ভিম্বর গলি অঞ্চলে গোলা নিক্ষেপ করেছে।
প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে আজ বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। ফলে লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি ও ডিএসইর পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতির কারণে শেয়ারবাজারে এমন দরপতন দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের শেয়ারবাজার এমনিতেই এখন বটম লাইনে রয়েছে। এখান থেকে বাজার খুব নিচে নামার সম্ভাবনা কম। আশা করছি, বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।’
অন্যদিকে দুপুর ১টা ৭ মিনিটে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২২৪ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৭৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬ টির, কমেছে ১৫২ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬ টির।
ডিএসইর এক সদস্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই দেশের শেয়ারবাজার পতনের মধ্যে রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের এখন দিশেহারা অবস্থা। এ পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে। দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির কারণে সবার মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্কে অনেক বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার বিক্রির চেষ্টা করছেন। এ কারণেই লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন দেখা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রির চাপ না বাড়ালে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে আশা করছি।’