২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর যে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, ৯-১০ শতাংশের বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সীমিত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি আশা করেছিল, অন্তর্বর্তী সরকার এবার কিছু স্বস্তি দেবে, কিন্তু বাজেটে সেই আশার গুড়ে বালি পড়েছে। তিনি মনে করেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে করহার বাড়ানো হলেও কর ফাঁকি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, বিনিয়োগ স্থবির, আর মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য যে অর্থনৈতিক পরিবেশ দরকার, তার কোনো প্রস্তুতি বাজেটে নেই।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট তৈরি হয়েছে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি রোধে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হলেও করহার বৃদ্ধির কারণে মধ্যবিত্তের ওপর করের বোঝা বাড়বে। নতুন করে সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। শহর-গ্রামে ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগের চেয়ে বেশি।
একই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোয় খরচ বাড়বে সাধারণ মানুষের। দেশীয় ফ্রিজ ও এসির ওপর ভ্যাট অব্যাহতি তুলে নেওয়ায় দাম বাড়বে। মোবাইল ফোন উৎপাদনেও বাড়ানো হয়েছে ভ্যাট। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিক সামগ্রী, শেভিং ব্লেডের উৎপাদনেও ভ্যাট দ্বিগুণ হয়েছে। এসব পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই বাজেট মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং খরচ ও করের বোঝা বাড়িয়ে দিয়েছে সাধারণ মানুষ ও মধ্যবিত্তের কাঁধে।