বহুমুখীকরণ ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে রপ্তানি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘মিট বাংলাদেশ এক্সপোজিশন’। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এক্সপোর্ট কম্পেটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) প্রকল্পের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই এক্সপোজিশনে প্রদর্শিত হচ্ছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাত—লেদার, ফুটওয়্যার, এমপিপিই, প্লাস্টিক এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলেও আমাদের রপ্তানিতে স্থবিরতা আসবে না। দেশের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিমানে রপ্তানিসহ অন্যান্য পরিবহন ব্যয়ে লাগাম টানার চেষ্টা চলছে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো, আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় ডিজিটালাইজেশন ও নীতিগত সংস্কারের মাধ্যমে রপ্তানিকারকেরা আগের চেয়ে সহজে ও কম খরচে বৈশ্বিক বাজারে পৌঁছাতে পারবেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ এখন সময়ের দাবি। শুধু কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকা সম্ভব নয়। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে উদ্ভাবনে যেতে হবে, নতুন বাজার খুঁজতে হবে।’
আয়োজকেরা জানান, প্রদর্শনীতে ১২০টির বেশি দেশীয় কোম্পানি অংশ নিচ্ছে। সিঙ্গাপুর, লিবিয়া, কলম্বিয়া, আলজেরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়াসহ ২৫টির বেশি দেশের আন্তর্জাতিক সোর্সিং এজেন্ট ও ক্রেতা এবং ১ হাজারের বেশি স্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে। তারা প্রদর্শনী শেষে বাংলাদেশি উৎপাদনকারী বিভিন্ন শিল্পকারখানা পরিদর্শন করবে। এতে দেশীয় উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের জন্য বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) সংযোগ এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর সুহাইল কাসিম বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশে বিদেশি সহায়তা কমে যাবে। তাই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে। প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়নেই টিকে থাকবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাত আমাদের প্রধান রপ্তানি উৎস হলেও প্লাস্টিক ও হালকা প্রকৌশল পণ্য খাতেও সমান সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে প্লাস্টিক শিল্পের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ। তাই এটিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতে হবে।’