[ad_1]
রোজা শুরুর পর প্রথম শুক্রবার আজ। গত সপ্তাহে সবজির দাম দুইদিনের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার পর এই সপ্তাহে কিছুটা কমেছে। আজকে সবজি, মুরগির মাংস, ডিমসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। তবে দাম কমলেও তা খুব সামান্যই কমেছে বলা যায়। এই দাম কমা তেমন সন্তুষ্টি আনতে পারেনি ক্রেতাদের মধ্যে। এদিকে সবজি-মুরগি-ডিমের দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে মুদি পণ্যের দাম।
শুক্রবার (৭ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা আজকের বাজারের চিত্র।
গত সপ্তাহের সাথে তুলনা করলে আজকের বাজারে বেশ কিছু সবজির দাম কমেছে। তবে দাম কমার পরেও সবজির দাম কম এমনটা বলা যাচ্ছে না। আজকের বাজারে প্রতি কেজি টক টমেটো ৩০ টাকা, দেশি গাজর ৪০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৭০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করল্লা ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, সজনে ২০০ টাকা, পটল ১০০-১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁয়াজকলি ৪০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা করে।
এক্ষেত্রে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে প্রতি কেজিতে টক টমেটোর দাম কমেছে ১০ টাকা, লম্বা বেগুনের দাম কমেছে ২০ টাকা, শসার দাম কমেছে ২০-৩০ টাকা, উচ্ছের দাম কমেছে ২০ টাকা, ঢেঁড়সের দাম কমেছে ২০ টাকা, পটলের দাম কমেছে ২০ টাকা, চিচিঙ্গার দাম কমেছে ২০ টাকা, ধুন্দলের দাম কমেছে ২০ টাকা, বরবটির দাম কমেছে ২০ টাকা। এছাড়া প্রতি পিস চাল কুমড়ার দাম কমেছে ১০ টাকা; আর হালিতে লেবুর দাম কমেছে ১০ টাকা। আর আজকে প্রতি কেজিতে মূলার দাম বেড়েছে ১০ টাকা, ধনেপাতার দাম বেড়েছে ২০ টাকা এবং প্রতি পিস ফুলকপির দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম গত সপ্তাহে হুট করেই বেড়ে গিয়েছিল। তবে আজকে দাম অনেক কমেছে। রোজার শুরু হবে বলেই বাজারে চাহিদা বেশি ছিল তাই তখন দাম বেড়েছিল। এখন বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। এখন দাম বাড়ার তেমন সম্ভাবনাও নেই। তবে যেসব সবজির সিজন শেষ বা নতুন করে আসছে সেগুলোর দাম কিছুটা বাড়তি আছে। কিছুদিন গেলে সেগুলোও কমে যাবে বলে জানান বিক্রেতারা।
বাজার করতে আসা মো. শাওন হাসান বলেন, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের অনেক ঝামেলা আছে। তারা কারণ ছাড়াই হুটহাট দাম বাড়িয়ে দেয়। রোজা আসছে বলে দাম বেড়ে গেলো, এটা কোনও কারণ হতে পারে?
রাজীব আহমেদ নামে আরেক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, গত সপ্তাহের থেকে আজকে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে এটাকে দাম কমানো বলে না। আপনি একবারে পঞ্চাশ টাকা বাড়িয়ে তারপর দশ টাকা কমিয়ে বলবেন যে দাম কমেছে এটা হবে না। রোজা শুরুর দুদিন আগেও লম্বা বেগুনের দাম ছিল ৫০/৬০ টাকা; সেটা হয়ে গেলো ১২০ টাকা। এখন ১০০ টাকা দাম রেখে আপনি দাম কমেছে এটা বলতে পারেন না।
স্থিতিশীল আলু-পেঁয়াজের বাজার, কমেছে আদা–রসুনের দাম
আজকে মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। এরমধ্যে ছোট এবং বড় উভয় আকারের পেঁয়াজ ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আজকে প্রতি কেজি নতুন সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, নতুন লাল আলু ২৫ টাকায়। নতুন বগুড়ার আলু ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আজকে নতুন দেশি রসুন ৮০-১০০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এক্ষেত্রে দেখা যায় গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে নতুন দেশি রসুনের দাম কমেছে ২০-৪০ টাকা এবং চায়না আদার দাম কমেছে ২০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
দাম কমেছে মুরগি–মাংস–ডিমের
আজকের বাজারে দেশি মুরগি ছাড়া সব ধরনের মুরগির মাংসের দাম কমেছে। একইসাথে কমেছে ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা উভয় ডিমেরই। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম।
আজকে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া আজকে ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা, কক মুরগি ২৪৫- ২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০-২৮৫ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন লাল ডিম ১১৫-১২০ টাকা, সাদা ডিম ১১০-১১৫ টাকা দরে।
এক্ষেত্রে দেখা যায় গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ১০-১৩ টাকা, কক মুরগির দাম কমেছে ২৮-৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে ৮-১০ টাকা। এছাড়া প্রতি ডজনে লাল ডিমের দাম কমেছে ৫ টাকা এবং সাদা ডিমের দাম কমেছে ৫-১০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য মাংসের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
বি.বাড়িয়া চিকেন হাউজের বিক্রেতা বলেন, মুরগির দাম রোজার আগে কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। এখন অনেকটা কমেছে। পনেরো রোজা পর্যন্ত দাম কিছুটা কমই থাকবে। এরপর আবার বাড়বে। কারণ তখন মানুষের চাহিদা বেড়ে যাবে।
এদিকে ডিমের দাম কমে যাওয়া নিয়ে বিক্রেতারা বলেন, এখন ডিমের চাহিদা কম তাই দাম কমে গিয়েছে। বেশিরভাগ বেকারিই এখন বন্ধ, তাই ডিম কম লাগছে। একারণেই দাম কম। রোজার পরে হয়তো আবার দাম বাড়তে পারে। আর রোজায় ডিমের দাম কমার কারণ এটাই যে, বেকারি বন্ধ থাকে।
এছাড়া আজকের বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ১২০০ (৫০০ গ্রাম)-২৬০০ (১ কেজি) টাকা, রুই মাছ ৪০০-৬৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৬০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০-১৬০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, কৈ মাছ ২২০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-৮০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০-৯০০ টাকা, মেনি মাছ ৬০০ টাকা, চিতল মাছ ৭০০-১০০০ টাকা, সরপুঁটি মাছ ২৫০-৫০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত
অন্যান্য সময়ের মতো আজকেও মুদি পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। আজকের বাজারে প্রতি কেজি বুটের বেসন ১৪০ টাকা, অ্যাংকর বেসন ৮০-৯০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, মাসকলাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৬০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা, প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
[ad_2]
Source link