Homeঅর্থনীতিস্কুল ব্যাংকিং: বাড়ছে হিসাব, কমছে আমানত

স্কুল ব্যাংকিং: বাড়ছে হিসাব, কমছে আমানত

[ad_1]

দেশের স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য চালু ‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রমে হিসাবের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, সেই সঙ্গে আমানতের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এই ব্যাংকিংয়ের আওতায় আমানত কমেছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকা। আর গত ৯ মাসে স্কুল ব্যাংকিংয়ে জমাকৃত টাকার পরিমাণ কমেছে ৩৩২ কোটি টাকার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। অর্থাৎ, যতই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাংকিং চর্চা বাড়ছে, ততই তাদের জমা রাখা অর্থ কমে যাচ্ছে, যা দেশের আর্থিক শিক্ষার জন্য একটা বড়ই সতর্কসংকেত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ শেষে দেশের স্কুলশিক্ষার্থীদের নামে স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় মোট ৪৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮২টি অ্যাকাউন্ট খোলা রয়েছে। গত ডিসেম্বরের তুলনায় অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বেড়েছে ৫১ হাজারের বেশি। কিন্তু এই সময় আমানতের পরিমাণ কমেছে ৬৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। গত ৯ মাসে হিসাব বেড়েছে ৬৭ হাজার ৮৬৬টি, অথচ আমানত কমেছে ৩৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

স্কুল ব্যাংকিংয়ের এই অবস্থার পেছনে মূলত দেশের দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বেড়ে যাওয়া জীবনযাত্রার ব্যয় দায়ী বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। স্কুলের পড়াশোনা ও খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি অভিভাবকেরা ছাত্রদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেন বেতন-খাতা-কলমসহ নানা খরচ মেটাতে। অন্যদিকে, ব্যাংকিং খাতে গত সরকারের সময় প্রকাশ হওয়া নানা অনিয়মের কারণে কিছু ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থায় ধস নামায় স্কুল ব্যাংকিংয়ের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানান, বছরের শুরু ও শেষে শিক্ষার্থীদের ছুটির সময় বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই পর্যটনে যায়। স্কুলের বকেয়া ফি পরিশোধের জন্য অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলেছেন। তাই এসব কারণেই আমানত কমার স্বাভাবিক ব্যাখ্যা রয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, স্কুল ব্যাংকিংয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। তারা মার্চ পর্যন্ত ৩১ লাখ ৩৬ হাজার ১১৪টি হিসাব খুলেছে, যেখানে জমা রয়েছে ১ হাজার ৫৯০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর হিসাব সংখ্যা ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৭টি, জমা ৪২২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১ লাখ ৯২ হাজার ৪০৬টি হিসাব খুলেছে, যেখানে জমা ৫২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। বিদেশি ব্যাংকগুলো ২ হাজার ৭১৫টি হিসাব চালায়, জমা ৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

অন্তর্ভুক্তিমূলক এই ব্যাংকিং কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেরা এগিয়ে রয়েছে। মোট হিসাবের ৫১ শতাংশ ছেলেদের নামে, যা ২২ লাখ ৮৫ হাজার ৮১টি। আমানতের পরিমাণেও তাদের অংশ প্রায় ৪৯ শতাংশ।

২০১০ সালে দেশের স্কুলশিক্ষার্থীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও আর্থিক সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে। ২০১১ সালে এ কার্যক্রমে টাকা জমার সুযোগ আসে। বর্তমানে দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ৫৯টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং চালু রেখেছে। ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা মাত্র ১০০ টাকা জমা রেখে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। এতে ফি, চার্জ, ডেবিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছাড় ও সুবিধা প্রদান করা হয়।

স্কুল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিশুরা আর্থিক ব্যবস্থাপনায় পারদর্শিতা অর্জন করছে, যা ভবিষ্যতে তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমানত কমে যাওয়া একটি সতর্কবার্তা, যা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উদ্দীপ্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত