সমালোচনা, প্রত্যাশা, অফ ফর্ম—এই সবকিছুর মাঝে এবার লিটন দাসের কাঁধে উঠে এসেছে আরও একটি নতুন ভার। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক। সেই হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিজের প্রথম সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে তিনি জানালেন, নেতৃত্বের এই দায়িত্ব তাকে ভাঙবে না, বরং হতে পারে ঘুরে দাঁড়ানোর এক বড় উপলক্ষ।
‘অধিনায়কত্ব না করেও আমি খারাপ খেলেছি। এখন অধিনায়ক হয়েছি—হতেই তো পারে, এবার ভালো খেলব। সব কিছুই তো দু’ভাবে হতে পারে,’—মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে এই কথাগুলো বলেন লিটন, বেশ স্বচ্ছভাবে।
টি-টোয়েন্টিতে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অবশ্য আশাব্যঞ্জক নয়। শেষ তিন ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ০, ৩ ও ১৪, সর্বশেষ ছয় ম্যাচে নেই কোনো ফিফটি। ২০২৫ সালে এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামা হয়নি লিটনের। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। বিপিএলে ১১ ম্যাচে এক সেঞ্চুরি সহ ৩৬৮ রান আর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ৬ ম্যাচে ২৩৭ রান করেছেন তিনি।
তবু আন্তর্জাতিক মঞ্চে রান না পাওয়ার খরা নিয়ে লিটনের মনোভাবে নেই হতাশা। বরং, সেটিকে তিনি দেখছেন সম্ভাবনার চোখে, ‘অনেক সময় চেষ্টা করলেও ফল আসে না। কিন্তু এমন সময়ও আসে, যখন একজন ক্রিকেটার দুই-একটা সিরিজে খারাপ খেলে, তারপর কামব্যাক করে। আমিও চাই, আমি যেভাবে খেলি, বাংলাদেশ যেন সেটা থেকে কিছু পায়।’
নেতৃত্বের পাশাপাশি ব্যাটিং অর্ডারে তার ভূমিকা নিয়েও তৈরি হয়েছে আলোচনার ঢেউ। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন আগেই জানিয়েছেন, লিটন হয়তো এবার ইনিংস উদ্বোধনে না নেমে তিন নম্বরে খেলতে পারেন। তবে নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে লিটন রাখলেন কৌশলী অবস্থান।
‘এ মুহূর্তে আমি কী চাই, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়,’ জানিয়ে দিলেন তিনি, ‘আমি চাই দল যাকে যেখানে খেলাবে, সে যেন সেখানে প্রস্তুত থাকে। অবশ্যই এমন হবে না যে আমি গিয়ে সাত নম্বরে ব্যাট করছি—তাহলে দল আমার কাছ থেকে কিছুই পাবে না।’
এই বক্তব্যেই যেন ফুটে উঠছে লিটনের পরিণত চিন্তাধারা। নেতৃত্বের ভার নয়, বরং সেটিকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে আবারও নিজেকে প্রমাণ করতে চান তিনি। দায়িত্বের জায়গা থেকে যেন তৈরি হচ্ছেন নতুনভাবে।
অধিনায়ক লিটন এবার ব্যাট হাতেও জবাব দিতে পারেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের সামনে নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা—আর সেই পাতার শুরুতে লিখছেন লিটন দাস নিজেই।