Homeখেলাধুলাআনচেলত্তি সাম্বার ছন্দ ফেরাবেন! | কালবেলা

আনচেলত্তি সাম্বার ছন্দ ফেরাবেন! | কালবেলা


ফুটবল খেলুড়ে সমৃদ্ধ কোনো দেশের জাতীয় দলে বিদেশি কোচ নিয়োগ করাটা ব্যর্থতার স্বীকারোক্তির মতোই! কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়োগের মাধ্যমে ব্রাজিলও সম্প্রতি স্থানীয় কোচদের ব্যর্থতা স্বীকার করেছে! অনেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ভক্তের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটানো ইতালিয়ান এ কোচকে নিয়োগের মাধ্যমে সেলেসাওরা কিন্তু শিকড়ে ফিরে যাচ্ছে।

ব্রাজিলিয়ান কোচিং একসময় বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে। দেশটি ১৯৫৮ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে তিন বিশ্বকাপ জয় করে। ১৯৫০ সালে মারাকানায় উরুগুয়ের কাছে ফাইনাল হারের মাধ্যমে যে প্রতিজ্ঞা করেছিল, তা ১৯৫৮ সালের আসরের জন্য ব্রাজিলকে দারুণভাবে প্রস্তুত করেছিল।

দল প্রস্তুত করতে ব্রাজিল কতটা সিরিয়াস ছিল, সেটা বুঝতে একটা ঘটনার উল্লেখ করা যাক। দলের ডাক্তার হিলটন গোসলিংয়ের নেতৃত্বাধীন একটি দল সুইডেনের ২৫টি স্থান যাচাই-বাছাই করে একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটি বেছে নিয়েছিল। দলের হোটেলের ২৮ জন নারী কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছিল। বিশ্বকাপ চলাকালে ফুটবলারদের মনোযোগ যাতে অন্যদিকে না যায়, এ জন্য নারী কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়েছিল। ফিটনেস ইস্যুতে ফুটবলারদের কঠোর নীতি মেনে চলতে হয়েছিল। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সহায়তা নেওয়া হয়েছিল।

কার্লো আনচেলত্তির কোচিং স্টাফদের সমন্বিত উদ্যোগের কথা এখনো শোনা যায়নি। কিন্তু ইতালিয়ান বর্ষীয়ান কোচ ব্রাজিল ফুটবলের এমন জায়গায় হাত দিতে চান, যেটা ছিল তাদের মূল—‘জোগো বনিতো’। একেক সময় একেক কোচ এসেছেন, প্রয়োগ করেছেন নিজেদের দর্শন। সাফল্যের শর্টকাটের সন্ধান ব্রাজিল ফুটবলকে জগাখিচুড়ি বানিয়ে দিয়েছে। গুয়াইয়াকিলে ইকুয়েডরের বিপক্ষে ম্যাচে কার্লো আনচেলত্তি ব্রাজিলের প্রথম বিদেশি কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেবেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই শুরু হবে সৌন্দর্য ফিরে পাওয়ার লড়াই।

ব্রাজিলিয়ান লিগ দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে ধনী। ব্রাজিলিয়ান দলগুলো গত ছয় কোপা লিবার্তাদোরেস জিতেছে। ছয় ফাইনালের চারটি ছিল অল-ব্রাজিলিয়ান। কিন্তু ছয় শিরোপার চারটি জিতেছেন পর্তুগিজ কোচ। এ পরিসংখ্যান ব্রাজিলিয়ান কোচদের বিষয়ে পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে। কেবল ক্লাব পর্যায়ে নয়, জাতীয় দলের পরিসংখ্যানও ব্রাজিলিয়ান কোচদের জন্য সুখকর নয়। আনচেলত্তির আগমনে দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের কোনো জাতীয় দলে কিন্তু ব্রাজিলিয়ান কোচ নেই! এটিই প্রমাণ করে, ব্রাজিলের অর্থ এবং প্রভাব আছে, আর্জেন্টিনার সংস্কৃতি এবং জ্ঞান আছে।

১৯৫৪ ও ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপে ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, ব্রাজিল শারীরিকভাবে ইউরোপীয় দলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে না। ২০০২ সালে ব্রাজিল শেষ বিশ্বকাপ জয়ের পর সে ধারণা আবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেলেসাওরা সর্বশেষ পাঁচ বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে মুখোমুখি হওয়া প্রথম ইউরোপীয় দলের কাছেই হেরে বিদায় নিয়েছে।

ব্রাজিল ফুটবলে শারীরিক প্রস্তুতির ওপর অতিরিক্ত মনোযোগ অর্ধ শতাব্দী আগে শুরু হয়েছিল। যেখানে ক্ল্যাসিক বল-প্লেয়িং ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে প্রায় বিলুপ্ত। গত মার্চে আর্জেন্টিনার কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি ব্রাজিলকে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে, যাতে দেশটি হারানো স্টাইল ফিরে পেতে পারে। আনচেলত্তিকে নিয়োগ কেবল ব্রাজিলকে আবারও বিদেশি ধারণার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নয়; বরং সে ঐতিহ্যের সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত করার প্রচেষ্টা, যা দেশটিকে মহান করে তুলেছিল।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত