ইউরোপ সেরার মঞ্চে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের এক চমক দেখিয়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)-র তরুণ উইঙ্গার দেজিরে দুয়ে জিতে নিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘সিজনের সেরা তরুণ ফুটবলার’ এর সম্মাননা। বার্সেলোনার বিস্ময় বালক লামিন ইয়ামালকে পেছনে ফেলেই এই পুরস্কার উঠেছে ১৯ বছর বয়সী দুয়ের হাতে।
শনিবার (৩১ মে) রাতে মিউনিখে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করে প্রথমবারের মতো ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে নেয় পিএসজি। আর সেই ম্যাচেই দুয়ে ছিলেন নায়ক।
তিনি প্রথম গোলটি বানিয়ে দেন আচরাফ হাকিমির জন্য, এরপর নিজেই করেন জোড়া গোল। মাঠের প্রতিটি জায়গায় ছিল তার দাপট, যা শেষ পর্যন্ত তাকে এনে দেয় তরুণদের মধ্যে সেরার স্বীকৃতি।
দুয়ে ও ইয়ামাল — দু’জনই এই মুহূর্তে বিশ্ব ফুটবলের দুই সবচেয়ে প্রতিভাবান কিশোর ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত। দু’জনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ‘টিম অফ দ্য সিজন’-এ জায়গা পেয়েছেন, কিন্তু আলাদা হয়েছেন পুরস্কারের দৌড়ে।
সিজনের সেরা খেলোয়াড় ডেম্বেলে
অন্যদিকে, পিএসজির আরেক ফরাসি তারকা উসমান ডেম্বেলে হয়েছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সিজনের সেরা খেলোয়াড়। মৌসুমের শুরুতে শৃঙ্খলাজনিত কারণে এক ম্যাচে বাদ পড়েছিলেন, কিন্তু এরপর নিজেকে চমৎকারভাবে ফিরে এনে আটটি গোল করেছেন ইউরোপের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে।
ফাইনালে গোল না পেলেও, ডেম্বেলের কর্মনিষ্ঠতা এবং নেতৃত্বগুণে মুগ্ধ কোচ লুইস এনরিকে বলেন, ‘আমি ব্যালন ডি’অর ডেম্বেলেকে দিতাম। ওর আজকের রক্ষণে ভূমিকা অসাধারণ ছিল। গোল, ট্রফি, নেতৃত্ব, প্রেসিং—সব দিক থেকেই সে অসাধারণ এক নেতা।’
পিএসজির দাপট, ইন্টার হতাশ
পিএসজি দলীয় সাফল্যের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে ‘টিম অফ দ্য সিজন’-এ। ফরাসি ক্লাবের মোট সাতজন খেলোয়াড় জায়গা করে নিয়েছেন এই দলে। সেখানে ইন্টার মিলান, যাদের ফাইনালে এমন লজ্জাজনক পরাজয়, পেয়েছে মাত্র একজন—ডিফেন্ডার বাস্তোনি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২০২৪–২৫: সিজনের সেরা একাদশ
গোলরক্ষক: জিয়ানলুইজি দোনারুমা (পিএসজি)
রক্ষণভাগ: আচরাফ হাকিমি (পিএসজি), মার্কিনিয়োস (পিএসজি), আলেসান্দ্রো বাস্তোনি (ইন্টার), নুনো মেন্ডেস (পিএসজি)
মধ্যমাঠ: ভিতিনহা (পিএসজি), ডেক্লান রাইস (আর্সেনাল)
আক্রমণভাগ: লামিন ইয়ামাল (বার্সেলোনা), দেজিরে দুয়ে (পিএসজি), উসমান ডেম্বেলে (পিএসজি), রাফিনিয়া (বার্সেলোনা)
দুর্দান্ত এক মৌসুম শেষ করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করেছে পিএসজি। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও উজ্জ্বল দুয়ে-ডেম্বেলেরা নিজেদের গৌরবময় অধ্যায়ে যুক্ত করলেন নতুন পালক। ইউরোপের ফুটবল মানচিত্রে এবার সত্যিই লেখা হলো নতুন ইতিহাস।