এক দশক সিটিতে কাটিয়ে অবশেষে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে বিদায়ের ঘোষণা দিয়েছেন কেভিন ডি ব্রুইনা। কিন্তু এই বিদায় মানেই কি ইংলিশ ফুটবলের মঞ্চ থেকে তার বিদায়? নাকি প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের জার্সিতে আবারও দেখা যাবে এই জাদুকরী প্লেমেকারকে? নিজেই দিয়েছেন রহস্যঘেরা ইঙ্গিত, আর লিভারপুল থেকে এসেছে এক খোলামেলা আহ্বান—‘আমাদের এখানে জায়গা আছে!’
এফএ কাপ ফাইনালে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে হারের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ডি ব্রুইনা। তার কথায় ছিল আবেগ, ছিল দ্বিধা, আবার ছিল কিছুটা রহস্যও। ‘আমি ভালো ফুটবল খেলতে চাই, যেখানেই যাই না কেন। আমার সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত নয়। পরিবার রয়েছে, ছোট ছোট সন্তান রয়েছে—আমাকে সবার কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
‘প্রিমিয়ার লিগেই থাকবো কি না?’—প্রশ্নে হেসে জবাব দেন, “সম্ভব, হয়তো।” এই একটা “হয়তো” যেন গোটা ইংলিশ ফুটবলে শিহরণ জাগিয়ে দিয়েছে!
লিভারপুলের আইকন মোহামেদ সালাহ আবার রাখঢাক না রেখে খোলাসা করেই বলেছেন, ডি ব্রুইনাকে লিভারপুলে চান তিনি।
‘তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই অসাধারণ ক্যারিয়ারের জন্য। সে প্রিমিয়ার লিগের জন্য দারুণ ছিল। আমি তাকে শুভকামনা জানাই… আর হ্যাঁ, আমাদের দলে ওর জন্য জায়গা আছে!’ — সালাহ, স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
এই মন্তব্য যেমন বন্ধুত্বপূর্ণ, তেমনি ছিল কৌশলীও। কারণ সালাহ জানেন, ডি ব্রুইনার মতো খেলোয়াড় ফ্রি এজেন্ট হিসেবে বাজারে আসলে সুযোগ হাতছাড়া করা উচিত নয়।
ডি ব্রুইনার বয়স এখন ৩৩। সম্প্রতি শোনা গেছে, ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলি তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আবার মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) কয়েকটি ক্লাবও তাকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো দিকেই চূড়ান্ত ইঙ্গিত দেননি ডি ব্রুইনা। বরং বলেছেন—
‘আমি নিজেও এখনো জানি না কোথায় যাচ্ছি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এলে সবাই জানবে।‘
এফএ কাপ ফাইনালের হতাশার পর পেপ গার্দিওলার দল এখন নজর দিচ্ছে প্রিমিয়ার লিগে ভালোভাবে মৌসুম শেষ করার দিকে। আগামী ২০ মে তারা মুখোমুখি হবে ব্রাইটন এবং ২৫ মে ফুলহামের বিপক্ষে খেলবে তাদের শেষ ম্যাচ। লক্ষ্য একটাই—টপ ফাইভে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা নিশ্চিত করা।
ম্যানসিটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার এখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে। সামনে অনেক পথ—ইউরোপের নতুন ক্লাব, মেজর লিগ সকারের প্রস্তাব, কিংবা সেই ইঙ্গিতপূর্ণ সম্ভাবনা—প্রিমিয়ার লিগেই থেকে যাওয়ার।
ডি ব্রুইনা কি প্রতিদ্বন্দ্বী এক ক্লাবে পরবর্তী অধ্যায় শুরু করবেন? নাকি তার জাদু এবার ফুটবে অন্য কোনো মহাদেশে? সময়ই দেবে উত্তর। তবে ফুটবলপ্রেমীরা নিশ্চিত—এই গল্পের পরবর্তী অধ্যায়টা হবে ঠিক ততটাই চমকপ্রদ, যতটা ছিল তার সিটির অধ্যায়।