বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) ঘুরেফিরে আবারও অনিয়মের অভিযোগ। আর তাই ফের মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অভিযান চালাল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শনিবার দুপুরে দুদকের চার সদস্যের একটি দল বিসিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে।
মূলত তিনটি বিষয়ের ভিত্তিতে এদিনের অভিযান পরিচালিত হয়। এগুলো হলো—তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, বিসিবির গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে অসঙ্গতির অভিযোগ।
দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, ‘তৃতীয় বিভাগ বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়মসহ বিসিবির গঠনতন্ত্র মেনে চলা হয়েছে কি না এবং আর্থিক বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’
তৃতীয় বিভাগে অংশ নিতে এত দিন পাঁচ লাখ টাকা করে এন্ট্রি ফি নেওয়া হতো। অনেকটাই নামেমাত্র থাকা এই টুর্নামেন্টের ব্যবস্থাপনায় অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সিসিডিএমের (ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্টোপলিস) কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে দুদক।
এছাড়া বিসিবির এফডিআরের টাকা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের নিয়মনীতি ঠিকঠাক অনুসরণ হয়েছে কি না, সেটিও তদন্তের আওতায় আছে।
এর আগে ২৭টি অভিযোগের ভিত্তিতে বিসিবির কাছে রেকর্ডপত্র চেয়েছিল দুদক। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—পূর্বাচলে স্টেডিয়াম নির্মাণে পরামর্শক ও ঠিকাদার নিয়োগের কাগজপত্র, আয়-ব্যয়ের অডিট প্রতিবেদন, আইসিসি ও এসিসির লভ্যাংশ নীতিমালা, বিপিএলের খরচের বিবরণ, বিদেশি কোচ নিয়োগের নীতিমালা, সম্মানী প্রদানসংক্রান্ত রেকর্ডসহ বিসিবির অর্থ, লজিস্টিকস ও বিপিএল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্য।
দুদকের এই টানা তদন্ত কার্যক্রমে বোর্ডের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। আর নতুন করে তৃতীয় বিভাগের মতো অপেক্ষাকৃত ছোট পরিসরের একটি টুর্নামেন্টকেও তদন্তের আওতায় আনা প্রমাণ করে, বোর্ডের প্রতিটি স্তর এখন নজরদারিতে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান বিসিবি। সেখানেই যদি দুর্নীতির গন্ধ থাকে, তবে সেটি শুধু ক্রিকেট নয়, গোটা ক্রীড়াঙ্গনের জন্যই অশনিসংকেত। এখন দেখার পালা, দুদকের অনুসন্ধান কোন দিকে মোড় নেয়।