বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) সম্প্রতি নাটকীয় পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এনএসসি’র (জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ) মনোনয়নে পরিচালক হয়ে বিসিবির সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছেন তিনি। তবে এই পরিবর্তন ঘিরে কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছে—সরকারি হস্তক্ষেপে কি আইসিসির নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে বিসিবি? আর ঠিক কী কারণে সরানো হলো ফারুককে?
এই প্রসঙ্গে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং বিপিএলের অব্যবস্থাপনার দায়ে ফারুক আহমেদকে সরানো হয়েছে। এটি আইসিসির বিধান মেনেই করা হয়েছে। তাই বিসিবির ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
এর আগে বৃহস্পতিবার বিসিবির ১০ সদস্যবিশিষ্ট বোর্ডের মধ্যে ৮ পরিচালক ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান। চিঠিতে ফারুককে ‘স্বেচ্ছাচারী’ ও ‘আধিপত্যবাদী’ আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে এনএসসি তার পরিচালক পদ বাতিল করে।
এনএসসির মতে, ২০২৫ বিপিএলে ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ঘিরে অনিয়ম এবং অসচ্ছতা নিয়েই তৈরি হয়েছে এই সংকট। তদন্ত প্রতিবেদনে এসব অব্যবস্থাপনার দায় চাপানো হয়েছে ফারুক আহমেদের ওপর। তার অপসারণের পেছনে এটিই ছিল প্রধান কারণ।
উল্লেখ্য, ফারুক আহমেদও এনএসসি মনোনীত হয়েই বিসিবির সভাপতি হয়েছিলেন। এবার সেই একই ধারায় অপসারণের শিকার হলেন তিনি। অপসারণের আগে তিনি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে একটি বৈঠকেও অংশ নেন, যেখানে তাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে তিনি পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, “আমাকে কোনো ব্যর্থতার কারণ জানানো হয়নি। কেবল বলা হয়েছে, ‘উপরমহল আমাকে চায় না।’ এতে কোনো ক্রিকেটীয় যুক্তি নেই।”
অন্যদিকে, আমিনুল ইসলামকে বিসিবির কাউন্সিলর হিসেবে এনএসসি থেকে মনোনীত করার পরপরই দ্রুততার সঙ্গে তাকে বোর্ড পরিচালক করা হয়। এরপর পরিচালকদের ভোটে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এনএসসি যেকোনো কাউন্সিলরকে পরিচালক হিসেবে মনোনীত করতে পারে, এবং সে ক্ষমতাই প্রয়োগ করা হয়েছে।
যদিও আইসিসি এবং ফিফা বরাবরই ক্রীড়া সংস্থায় সরকারি হস্তক্ষেপকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। এর আগে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এবং ভারতের ফুটবল ফেডারেশনও এমন হস্তক্ষেপে নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছিল। তবে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্ষেত্রে এমন কোনো শঙ্কা নেই।