বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সদ্য সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদকে অপসারণ নিয়ে দেশের ক্রিকেটে চলছে তুমুল আলোচনা। সেই আলোচনায় এবার যুক্ত হলেন জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। নিজের বরখাস্তের ঘটনাকে ঘিরে বিসিবির অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও, ফারুকের অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন, ‘মাঠে বা মাঠের বাইরে, স্বচ্ছতা, প্রক্রিয়া আর সম্মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনয়নে বিসিবির পরিচালক হন ফারুক আহমেদ এবং একই মাসে পরিচালকদের ভোটে বোর্ড সভাপতি নির্বাচিত হন। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল- একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, স্বেচ্ছাচারিতা এবং বোর্ডের পরামর্শ না নিয়ে হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করা।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই বিসিবির আট পরিচালক সম্প্রতি এনএসসিতে অনাস্থা জানান। এরপর ২৯ মে ফারুকের পরিচালক পদে মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসি, যার ফলে তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিসিবি সভাপতি পদ থেকেও অপসারিত হন।
অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানরত চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ফারুকের অপসারণের খবরটি লিংকডইনে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আমার বিদায়টি এখন বৃহত্তর ঘটনার একটি অংশ- ইএসপিএনক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।’
এরপর যোগ করেন, ‘আমি চাই আমার কাজই আমার হয়ে কথা বলুক। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে আবারও আলোচনায় এসেছে আমার নাম। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিসিবি সভাপতির অপসারণের পেছনে একটি কারণ ছিল আমাকে বরখাস্ত করার পদ্ধতি, যেখানে বোর্ডের যথাযথ পরামর্শ ছাড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’
তারপর হাথুরুসিংহে লেখেন, ‘স্বচ্ছতা, প্রক্রিয়া এবং সম্মান- মাঠে হোক বা মাঠের বাইরে- এ মূল্যবোধগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে অসদাচরণ ও চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত করে। পরদিনই তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন এবং গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অভিযোগ তোলেন- তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়াটি ছিল অনিয়মতান্ত্রিক ও অসম্মানজনক।
ফারুক আহমেদের অপসারণ এবং হাথুরুসিংহের মন্তব্যে স্পষ্ট, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে বড় প্রশ্নচিহ্ন। হাথুরুসিংহের মন্তব্য হয়তো বিসিবিকে সরাসরি আঘাত করে না, তবে তার বার্তায় রয়েছে এক স্পষ্ট আহ্বান- পেশাদার প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা আর সম্মান যেন কখনো হারিয়ে না যায়।