ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল মৌসুম পেরিয়ে এলেন রাফিনিয়া, আর ঠিক তখনই বার্সেলোনার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে নিজের ভবিষ্যতের দিকটা আরও পরিষ্কার করে দিলেন এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ২০২৮ সাল পর্যন্ত কাতালান ক্লাবের সঙ্গে থাকা নিশ্চিত করেছেন রাফিনিয়া, আর জানিয়ে দিলেন—এখানেই ক্যারিয়ার শেষ করতে চান তিনি।
‘স্বপ্নটা বরাবরই ছিল বার্সেলোনার হয়ে ক্যারিয়ার শেষ করার,’ ক্লাবের অফিশিয়াল ঘোষণায় আবেগঘন কণ্ঠে বললেন রাফিনিয়া। ‘এই পরিবারের অংশ হয়ে আরেক বছর থাকতে পারাটা আমার জন্য বিশেষ অনুভূতির। আমি চাই এই জার্সিতে থেকে নিজের সেরা ফুটবলটা খেলেই বিদায় নিতে।’
২০২২ সালে লিডস ইউনাইটেড থেকে বার্সায় পা রাখা রাফিনিয়া শুরুতে ছিলেন অনিশ্চয়তার মধ্যে। স্পেনে নিজের প্রথম দুই মৌসুমে মাত্র ১৩টি লিগ গোল করেছিলেন, আর বার্সার আর্থিক অনিশ্চয়তার কারণে তাকে বিক্রির ভাবনাও ছিল।
কিন্তু ২০২৪-২৫ মৌসুমে সেই রাফিনিয়া একদম বদলে গেছেন। ৫৬ ম্যাচে ৩৪ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট! লা লিগা, কোপা দেল রে এবং স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে ঘরোয়া ট্রেবল জিতেছে হান্সি ফ্লিকের বার্সেলোনা—আর এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাত্রায়ও দারুণ অবদান রাখেন রাফিনিয়া, করেন ১৩ গোল, ৯ অ্যাসিস্ট। এমন পারফরম্যান্সে প্রিমিয়ার লিগ ও সৌদি আরবের বড় ক্লাবগুলো তাকে পেতে আগ্রহ দেখালেও রাফিনিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন— ‘আমার হৃদয় কেবল কাতালুনিয়ায়।’
এ মৌসুমে বার্সেলোনার পাঁচ অধিনায়কের একজন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রাফিনিয়া। তার সঙ্গে আছেন টের স্টেগেন, রোনাল্ড আরাউহো, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং এবং পেদ্রি। নিজেকে এখন দেখেন আরও দায়িত্বশীল একজন হিসেবে।
‘আমি এখন রাফিনিয়া, বাবা এবং অধিনায়ক। এই ভূমিকাটা আমাকে পরিণত করেছে,’ বলেছেন তিনি।
‘এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, এই ক্লাব, সতীর্থ, কোচিং স্টাফ ও সমর্থকদের পাশে পেলে আমি আরও ভালো মানুষ ও ফুটবলার হতে পারব।’
নতুন চুক্তির পর ব্যক্তিগত লক্ষ্যও স্পষ্ট করেছেন এই ২৮ বছর বয়সী তারকা: ‘গোল, অ্যাসিস্ট—এসব তো থাকবে, কিন্তু আমার আসল লক্ষ্য বার্সার জার্সিতে আরও অনেক ট্রফি জেতা।’
বার্সেলোনা মৌসুম শেষ করবে রবিবার অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠে। এরপরের অধ্যায় শুরু হবে নতুন চুক্তির রাফিনিয়াকে ঘিরে, যিনি এখন শুধু ক্লাবের প্রাণভোমরা নন—সম্ভাব্য ব্যালন ডি’অর প্রার্থীদের একজন।
এক সময়ের বিক্রির তালিকায় থাকা রাফিনিয়া এখন বার্সেলোনার ভবিষ্যতের কাণ্ডারি। তিনি নিজেই জানিয়ে দিলেন—এ পথের শেষটা যেন ক্যাম্প ন্যুতেই হয়!