মাত্র ১৭ বছর বয়সেই যিনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন, তার নাম লামিন ইয়ামাল। আর এই বিস্ময় বালকের পারফরম্যান্স দেখে যেখানে ফুটবল বিশ্ব মুগ্ধ, ঠিক সেখানেই ‘মাঠে গম্ভীরতা আর আচরণে ভারসাম্যহীনতা’র কারণে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহাম। লিভারপুল ও স্কটল্যান্ডের সাবেক কিংবদন্তি গ্রায়েম সুনেস সরাসরি বলেই ফেলেছেন—‘এ বছর সে একটা হতাশা!’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ইন্টারের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেন ইয়ামাল—একটি গোল করেন, আর বার্সাকে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ৩-৩ সমতায় ফেরাতে বড় ভূমিকা রাখেন। সুনেস বলছেন, ‘১৭ বছর বয়সে কেউ এত ভালো খেলতে পারে—এটাই ভুল মনে হয়!’ তবে তার এই ‘ভুল’ বক্তব্যে রয়েছে প্রশংসার মোড়ক। তিনি মনে করেন, ইয়ামালের সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিণত ভাবনা এবং পরিশ্রমের মানসিকতা তাকে ভবিষ্যতের অন্যতম সেরা তারকা বানিয়ে তুলছে।
ডেইলি মেইলে নিজের কলামে সুনেস লেখেন, ‘ইয়ামাল মাঠে এমন সব সিদ্ধান্ত নেয় যা অনেক অভিজ্ঞ ফুটবলারের কাছ থেকেও আশা করা যায় না। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিংবা লিওনেল মেসির থেকেও এই বয়সে এগিয়ে সে।’
এই প্রশংসার বিপরীতে আসে তীক্ষ্ণ সমালোচনা—জুড বেলিংহামের জন্য। রিয়ালে অভিষেক মৌসুমে দুর্দান্ত শুরুর পর এখন যেন ছন্দহীন, এবং শৃঙ্খলার অভাব লক্ষ করছেন সুনেস। ‘আমি ভাবছিলাম সে বিশ্বসেরা হয়ে উঠবে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সে কারও কথা শুনছে না,’—বলেছেন সাবেক লিভারপুল তারকা।
সুনেসের মতে, বেলিংহাম শুধু প্রতিভা দিয়ে নয়, আচরণ দিয়েও পিছিয়ে যাচ্ছেন। ‘রেফারির সঙ্গে অকারণে বিতর্কে জড়ানো, নিজের আবেগকে অজুহাত বানিয়ে আচরণগত সমস্যাগুলো ঢাকার চেষ্টা—সব মিলিয়ে সে ভুল পথে হাঁটছে। ইয়ামালের উচিত এসব থেকে শিক্ষা নেওয়া।’
সুনেস বলেন, ‘একটা ফুটবলারের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—যেকোনো বয়সেই শেখা থামিয়ে দেওয়া যাবে না। ক্লাবের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কাছ থেকে শিখতে হবে, ভুল মেনে নিতে হবে। আমি আশা করি বেলিংহাম আবার ঠিক পথে ফিরবে, কিন্তু এখন সে যেমন খেলছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না।’
এখন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই কেবল মাঠে নয়, ভবিষ্যতের নেতৃত্বেও। একজন ১৭ বছরের বিস্ময়-তরুণ যিনি বার্সার নতুন আশা, অন্যজন ২০ বছর বয়সেই রিয়ালের প্রধান মুখ হয়ে উঠলেও এখন ছন্দহীনতায় ভুগছেন। ১১ মে মৌসুম নির্ধারণী এল ক্লাসিকোতে দেখা হবে এই দুই তারকার—মাঠে প্রমাণ করার জায়গা তখনই, কিন্তু শেখার জায়গা শুরু হয় আজ থেকেই।