একটা সময় যিনি ছিলেন ব্রাজিলের গোলমেশিন, ১৯৯৪ বিশ্বকাপজয়ী নায়ক। সেই রোমারিও এবার নিজের উত্তরসূরিদের নিয়ে মুখ খুললেন। এবং বললেন এমন সব কথা, যা বর্তমান ব্রাজিল দলে আগুন লাগিয়ে দিতে পারে।
ফুটবলে ব্রাজিল মানেই আবেগ, প্রতিভা, আর বিশ্বসেরা হওয়ার তাড়না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নেই সেই ধার, নেই সেই দাপট। ২০২২ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়, এরপর ২০২৪ কোপা আমেরিকায় হতাশাজনক পারফরম্যান্স এবং ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও ধুঁকছে সেলেসাওরা। এর মাঝে, আগুনে মন্তব্য করে নড়েচড়ে বসালেন রোমারিও।
ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম ‘গ্লোবো’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোমারিও বলেন, ‘আমি দেখি খেলোয়াড়রা তাদের ক্লাবের জন্য অনেক বেশি খেলে, জাতীয় দলের জন্য ততটা নয়।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি নিশ্চিত না তারা ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ খেলছে কিনা, কিন্তু তাদের কমিটমেন্টের স্তর স্পষ্টভাবে আলাদা।’
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো গোয়েস ও রাফিনিয়ার মতো তারকারা রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় নিয়মিত ঝলক দেখালেও ব্রাজিলের জার্সিতে তারা যেন অন্য কেউ। এটাই ভাবিয়ে তুলেছে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে।
রোমারিও স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আমার প্রজন্মে আমরা জাতীয় দলের জন্য সবকিছু উজাড় করে দিতাম। আমাদের মধ্যে ছিল জয় পাওয়ার ক্ষুধা। ওরা যদি সেটা বোঝে, তাহলে হয়তো জিতবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় দল মানে ভিন্ন কিছু। আমি গর্বিত আমি সেখানে যা অর্জন করেছি, এবং সেটাই আমার ক্যারিয়ারকে সংজ্ঞায়িত করেছে।’
ব্রাজিল দলের সবচেয়ে বড় সমালোচনা আসে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪–১ গোলের লজ্জাজনক পরাজয়ের পর। ওই ম্যাচের আগে রাফিনিয়া বলেছিলেন, ‘আমরা আর্জেন্টিনাকে পিষে দেব… আমি অবশ্যই গোল করব।’
কিন্তু বাস্তবে ছিল উল্টো। রাফিনিয়া ছিলেন নিষ্প্রভ। আর এখন রোমারিও তার সেই মন্তব্য নিয়ে বলেন, ‘ওই ম্যাচের ফলাফল ভয়াবহ ছিল, এবং রাফিনিয়া প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি।’
এই ব্যর্থতার মাঝে নতুন আলোচনায় উঠে এসেছে এক সম্ভাবনা—রিয়াল মাদ্রিদের কোচ কার্লো আনচেলত্তি নাকি ব্রাজিলের ডাগআউটে বসতে যাচ্ছেন! ঠিক কবে তিনি দায়িত্ব নেবেন, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়, কিন্তু তার আগমন যদি সত্যি হয়, তবে এই ব্রাজিল দলে চেহারার পরিবর্তন আশা করাই যায়।
রোমারিওর মন্তব্য অনেকের চোখে কঠিন, অনেকের চোখে দরকারি। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—এই প্রজন্ম কি নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে? নাকি হারিয়ে যাবে ফুটবলের অতলে?