ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার (ASF)-এর মতো একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে শূকরদের মৃত্যু অনিবার্য হয়ে ওঠে। সংক্রমণের ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অসমের মরিগাঁও জেলার একটি গ্রামে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে প্রশাসন।
ধারণা করা হচ্ছে, আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস এখন মরিগাঁও জেলার ধরমতুল এলাকার দাপোনিবাড়ি গ্রামে হানা দিয়েছে। শূকরদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। এই সংক্রমণের কারণে ৪ জুন থেকে ওই গ্রামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। দাপোনিবাড়িকে ASF সংক্রমণের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রশাসনের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, দাপোনিবাড়ির এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত সব গ্রামকে ‘সংক্রামিত এলাকা’ হিসেবে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি, দশ কিলোমিটার এলাকার গ্রামগুলোকে নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছে। সংক্রামিত এলাকার ভেতর ও বাইরে জীবিত শূকর, শূকরের মাংস, খাদ্য বা এসব উপাদান দিয়ে তৈরি যেকোনো পণ্য পরিবহন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রশাসনের আরও নির্দেশ, ASF-এর উপসর্গ দেখা দেওয়া বা নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত শূকরদের অন্য কোথাও স্থানান্তর করা যাবে না। একইভাবে, সংক্রমিত পশুর সংস্পর্শে আসা যেকোনো শূকর ও শূকরজাত পণ্যও বাইরে নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ।
আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার কী?
আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার (ASF) একটি অত্যন্ত সংক্রামক ভাইরাসঘটিত রোগ, যা মূলত শূকরদের আক্রান্ত করে এবং অনেকক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। এই ভাইরাসের এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর টিকা বা চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়নি। যদিও এই রোগ মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটায় না, তবে পশুসম্পদ রক্ষায় এটি একটি বড় হুমকি।
ASF ভাইরাস প্রধানত দূষিত খাবার, পানি এবং আক্রান্ত শূকরের সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথম ১৯২০-এর দশকে আফ্রিকায় এই রোগ শনাক্ত হয় এবং সেখান থেকেই এটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। রোগটির সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি হওয়ায় বহু দেশে এই রোগ মোকাবেলায় জরুরি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।