সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা তদন্তে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁদের তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গতকাল সকাল ১০টার দিকে কমিটির সভাপতি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বিমানবন্দরে যান। তাঁরা বেলা ৩টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে কাজ করেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, প্রথম দিনে তাঁরা বিভিন্ন কর্মকর্তার সাক্ষাৎ নিয়েছেন। আবদুল হামিদের ট্রাভেল ডকুমেন্টস সংগ্রহ করেছেন।
৭ মে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আবদুল হামিদ কীভাবে দেশ ছাড়লেন, তা পর্যালোচনা করবে এই কমিটি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
কমিটির কাজের পরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি সাবেক রাষ্ট্রপতির বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করে তিনি কীভাবে বিমানবন্দর দিয়ে গেলেন, তা পরীক্ষা করবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি বা ব্যত্যয় হয়েছে কি না, তাও খুঁজে দেখবে কমিটি।
যাঁরা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁদের চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, সে সুপারিশও করবে কমিটি।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তদন্তকাজে কমিটি প্রয়োজনীয় দলিলপত্র, যন্ত্রপাতি ও প্রমাণ চাইতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎ নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে।
সব সংস্থা কমিটির নির্দেশনা পালন ও সহায়তা দিতে বাধ্য থাকবে। কমিটি ইচ্ছা করলে অতিরিক্ত সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে।
এ ঘটনায় এরই মধ্যে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এবং রাতের পালায় বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাহসিনা আরিফকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের সদর থানায় হওয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আজহারুল ইসলাম এবং পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) টিএসআই মো. সোলায়মানকে।
ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) মো. মতিউর রহমান শেখকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।