কূটনীতিক মো. সুফিউর রহমানকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত ২০ এপ্রিল তার নিয়োগের বিষয়ে আদেশ জারি হলেও গত দুই সপ্তাহেও মন্ত্রণালয়ে অফিস করতে পারেননি তিনি। আদেশ জারি হওয়ার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর জন্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ খালি কক্ষটি গোছানোর কাজ শুরু হলেও ওপর মহলের নির্দেশ না থাকার এক পর্যায়ে তাও বন্ধ হয়ে যায়।
সুফিউর রহমানের নিয়োগকে কেন্দ্র করে আপাতদৃষ্টিতে এক ধরনের অস্থিরতা রয়েছে মন্ত্রণালয়ে। একইসঙ্গে তার নিয়োগকে কেন্দ্র করে নেতিবাচক প্রচারণার কারণে বিব্রত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কূটনীতিকরা। তাদের মতে, মন্ত্রণালয়ের প্রাসঙ্গিকতা এবং কর্মকর্তাদের সম্মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে এ ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা ভীষণ ক্ষতিকর। এর ফলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ।
নাম প্রকাশ না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিয়ে সুফিউর রহমানকে নিয়োগ দেওয়া পর একটি মহল যেভাবে বিরোধিতা করছে, সেটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক।’
কূটনীতি হচ্ছে যেকোনও দেশের ‘ফার্স্ট লাইন অব ডিফেন্স’ এবং এটি করে থাকেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত পেশাদার কূটনীতিকরা। কিন্তু নেতিবাচক প্রচারণা মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতাকে দুর্বল করবে বলে তিনি জানান।
দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনারও ঘাটতি রয়েছে ওপর মহল থেকে।’
বিব্রত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সুফিউর রহমানকে নিয়োগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা শুরু হয়। সামাজিকমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের তথ্য বিকৃত করে পরিবেশন থেকে শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহলের কাছে ইমেইলে উড়ো চিঠিও পাঠানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে সবাই এই নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। এর আগে বর্তমান সরকার একাধিক সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় নিয়োগ দিয়েছে। তাদের নিয়ে এমন নেতিবাচক প্রচারণা হয়নি। গত ২০ নভেম্বর খোদা বকশ চৌধুরী, সায়েদুর রহমান এবং এম আমিনুল ইসলামকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সবাই নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ে নির্বিঘ্নে কাজ করছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের নিয়োগ এর আগেও হয়েছে। সুফিউর রহমানের নিয়োগের কারণে গুটিকয়েক ব্যক্তি নিজস্ব স্বার্থের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।’