রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে সরকারি খাস জমি দখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে। মাঝে মাঝে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দখলের ঘটনা থেমে থাকছে না।
সর্বশেষ, ইউনিয়ন পরিষদের নামে খাস জমিতে মাত্র তিন হাজার টাকায় বাৎসরিক লিজ প্রদান করে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর। তারই ভিত্তিতে গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) স্থানীয় মো. শামীম হোসেন ইউনিয়ন পরিষদের ওই জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনাপুর বাজারের মাজবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে ইউনিয়ন পরিষদের খাস জমিতে কয়েকজন রাজমিস্ত্রি নির্মাণকাজ চালাচ্ছেন। মিস্ত্রিরা জানান, তারা শামীমের নির্দেশে কাজ করছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, তিন হাজার টাকায় এক বছরের জন্য লিজ নিয়ে কোটি টাকার মূল্যের জমি দখল করা হচ্ছে। পাকা স্থাপনা নির্মিত হলে ভবিষ্যতে জমিটি আর ইউনিয়ন পরিষদের দখলে থাকবে না। অভিযোগ রয়েছে, লোক দেখানো তিন হাজার টাকায় লিজের আড়ালে চেয়ারম্যান মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া বাজারের ডাস্টবিনের জমি, সোনাপুর মীর মশাররফ হোসেন ডিগ্রি কলেজের সামনে জমি দখলসহ একের পর এক জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, লিজের কাগজে দাগ নম্বর উল্লেখ থাকলেও কত শতাংশ জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লিজ আদায়ের রশিদে চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীরের স্বাক্ষর রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের খাস জমি বাৎসরিক তিন হাজার টাকায় লিজ দেওয়া হয়েছে। তবে, পাকা ভবন নির্মাণের বিষয়টি জানার পর তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।
বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসানুল হক শিপন বলেন, জায়গাটি ইউনিয়ন পরিষদের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন,:জমিটি বাজারের নয়, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব জমি। বাৎসরিক লিজ দেওয়া হলেও সেখানে পাকা স্থাপনা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।