Homeজাতীয়ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের প্রায় সব ফৌজদারি মামলাই প্রত্যাহার হয়েছে: আইন উপদেষ্টা

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের প্রায় সব ফৌজদারি মামলাই প্রত্যাহার হয়েছে: আইন উপদেষ্টা

[ad_1]

গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে দায়েরকৃত প্রায় সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের গত ‘১০০ দিনের কার্যক্রম’ নিয়ে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

এসময় উপদেষ্টা আরও জানান, সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিলের জন্য পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ফলে উক্ত আইনের অধীনে দায়েরকৃত সব স্পিচ-অফেন্সের মামলা প্রত্যাহার করা হবে। অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ করে এই আইন প্রত্যাহারে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করেছি। তবে হ্যাকিং ও সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলো চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

আইন উপদেষ্টা জানান, এই কদিনে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে ৫ জন বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি এবং অধস্তন আদালতে ১০৯ জন বিচারক নিয়োগে সাচিবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ৬১টি জেলায় ৪ হাজার ৩০০ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দ্রুততম সময়ে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এতো বেশি সংখ্যক নিয়োগ বাংলাদেশে এর আগে ঘটেনি। এর মাধ্যমে সব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে। এখন যে ঢালাও মামলা হচ্ছে, মামলা বাণিজ্য করা হচ্ছে; তাও প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। 

যারা এমন ‘মামলা বাণিজ্য’ করছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এই ব্যবস্থা নিবোই।’ 

তাছাড়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) বিস্ফোরক মামলা পরিচালনার জন্য ২০ জন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।

তিনি আরও জানান, এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন সহায়তা করেছে আইন মন্ত্রণালয়। চিফ প্রসিকিউটরসহ ১১ জন প্রসিকিউটর নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া স্পেশাল প্রসিকিউটোরিয়াল অ্যাডভাইজর হিসেবে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে ২২৯ জন আইন কর্মকর্তাও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন সংশোধন অধ্যাদেশ বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, অধ্যাদেশ পাস হলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হবে। 

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এবং গত জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিতের লক্ষ্যে রোম স্ট্যাটিউট এবং আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সুপারিশের আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ এর সংশোধন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। এ সপ্তাহেই আইনটির সংশোধনী পাস হবে এবং অধ্যাদেশ পাস হলে সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানন তিনি।

উপদেষ্টা জানান, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগে নতুন আইন করা হবে। আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই এটা করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি। 

আইন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা। এই হিসাব বিবরণী যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা কাজ করছি। ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের অধ্যাদেশ হচ্ছে, সেখানে কোনও রাজনৈতিক দলের বিচারের ধারা যুক্ত হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটা-দুটো দিন অপেক্ষা করেন। আর সংশোধনীটা তো উপদেষ্টা পরিষদকে গ্রহণ করতে হবে। আমাদের প্রস্তাবনায় যেটা আছে সেখানে আদালতকে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। তবে আদালত যদি মনে করেন, তাহলে তারা এ বিষয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কনসার্ন অথরিটির কাছে সুপারিশ করতে পারেন।’

সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করা হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকার ভালো একটা নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে উপদেষ্টারা আগের পেশায় ফিরে যেতে চায়।’  

এরইমধ্যে বিভিন্ন মামলায় পলাতক আসামিদের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দেশে কোনও আসামিকে না পেলে রেড এলার্ট জারির আবেদন করতেই পারি। বাংলাদেশ ইন্টাপোলের সদস্য।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা নিজে পালিয়েছেন, পরিবার এবং স্বজনদেরও তিনদিন আগে পাঠিয়েছে। অথচ ফোনকলের মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের বিপদে ফেলছেন। নেতাকর্মীদের তাকে প্রশ্ন করা উচিত, কেন পালিয়েছেন?’

আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার আওয়ামী লীগের মতো দমন-পীড়ন চায় না। অযৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে নানা দুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকার বিষয়গুলো দেখছে। কঠোর হলে সরকার ভালোভাবেই কঠোর হবে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত