Homeজাতীয়ছোট ও মাঝারি গরুতে ক্রেতার আগ্রহ বেশি

ছোট ও মাঝারি গরুতে ক্রেতার আগ্রহ বেশি

[ad_1]

দর-কষাকষি শেষে মুখে হাসি। গরুর গলায় বাঁধা রশির প্রান্ত ধরার হাতবদল। গরু নিয়ে বাড়ির পথ ধরা। এমন দৃশ্য গতকাল বুধবার বারবার চোখে পড়েছে রাজধানীর অস্থায়ী ও স্থায়ী পশুর হাটগুলোয়। দাম গতবারের চেয়ে বেশি না কম, এ নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও ব্যাপারীদের অপেক্ষা কেটে ঈদের ছুটি শুরুর আগেই জমেছে কোরবানির পশুর হাটগুলো।

রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলোয় দুই-তিন দিন আগে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল উঠলেও ক্রেতার দেখা ছিল না। অলস সময়ই কেটেছে ব্যাপারী ও তাঁদের সঙ্গের লোকদের। তবে গতকাল সকাল থেকেই দৃশ্য বদলে যায়। বাড়ে ক্রেতা সমাগম। আজ বৃহস্পতিবার ও কাল শুক্রবার ক্রেতা আরও বাড়বে বলে আশা হাটসংশ্লিষ্টদের।

এবারও চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর। বড় গরু দেখতে উৎসাহী দর্শনার্থীরা ভিড় করলেও কেনার আগ্রহ নিয়ে গেছেন দু-একজন। ব্যাপারীরা বলছেন, বড় আকারের গরুতে কৃষকের খরচ বেশি, কিন্তু লাভ কম। কিন্তু ছোট ও মাঝারি গরুতে লাভ বেশি। বিক্রিও হয় বেশি।

পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটে কুষ্টিয়া থেকে বড় আকারের ২০টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী কিসমত আলী। গতকাল দুপুর পর্যন্ত একটিও বিক্রি হয়নি। আলাপকালে হতাশা নিয়ে বললেন, ভবিষ্যতে ঢাকায় আর বড় গরু আর আনবেন না। একটি গরুর পেছনে অনেক খরচ হলেও যে দাম বলছেন, তাতে খরচই উঠবে না।

একই হাটে গরু নিয়ে আসা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চাপাইগাজী গ্রামের ফরিদ উদ্দিন অবশ্য আছেন ফুরফুরে মেজাজে। বললেন, ছোট ১৮টি গরু এনেছিলেন, একটি বিক্রি করেছেন। ছোট গরুর চাহিদা থাকায় তিনি খুশি। তিন মণের বেশি মাংস হবে এমন গরুর দাম চাইছেন এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। ক্রেতা ৯৫ হাজার টাকা বলছেন। ছয় মণের বেশি মাংস হবে এমন একটি গরু ২ লাখ ২০ হাজারেই ছেড়ে দেবেন।

রহমতগঞ্জ মাঠে গরু কিনতে কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা হাসিবুর রহমান বলেন, এবার দাম বেশি হাঁকা হচ্ছে। তবে পছন্দ হলে গরু কিনেই ফিরবেন। একই মত আরও কয়েকজন ক্রেতার। তাঁরা দর-কষাকষি করছিলেন। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতার দামের বেশি ব্যবধান হাসি ফোটাচ্ছিল না কারও মুখে।

রহমতগঞ্জ হাটে কয়েকটি গোলাপি ও কালো রঙের মহিষও উঠেছে। অবশ্য এই হাটের বড় আকর্ষণ মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের সাদা গরু। হাট পরিচালনাকারীরা জানান, মিরকাদিমের গরু ঈদের দু-এক দিন আগে ওঠে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় অল্প সময়েই বিক্রি হয়ে যায়।

দুপুরে শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাব মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটে দাম গতবারের মতো বলে জানালেন কমলাপুরের বাসিন্দা তাহমীদ। তিনি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছেন। বললেন, গত বছরও প্রায় একই দামে একই আকারের একটি গরু কিনেছিলেন।

ওই হাটে পাবনা থেকে ১৯টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী হামিদুল হক। তিনি বলেন, দাম কম-বেশি যা-ই হোক, কিছু লাভ থাকলেই ছেড়ে দেবেন। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি এলে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে কাদা। এমন পরিবেশে গরু কয়েক দিন থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

শাহজাহানপুর হাট পরিচালনাকারীদের একজন আশরাফুল ইসলাম জানান, তাঁদের হাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকে বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়েছে।

দুপুরে শাহজাহানপুর হাট পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, গরুর এমন একটা স্বাভাবিক দাম থাকুক, যেখানে কৃষক বা খামারি লাভবান হন এবং ক্রেতাও লাভবান হন। গরুর দাম যদি খুব কমে যায়, তখন কৃষক বা খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আবার দাম বেড়ে গেলে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গতকাল রাজধানীর প্রতিটি পশুর হাটেই ব্যাংকের অস্থায়ী এটিএম বুথ খোলা হয়েছে। সেখানে টাকা তোলা ছাড়াও জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। হাটে রয়েছে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন।

যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটের গরু কলেজ মাঠ ছাড়িয়ে প্রতিবারের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের খালি জায়গা, পাশের সরু সড়কসহ আশপাশের সব সড়কে বিস্তৃত হয়েছে। ওই হাটের ‘সাদা বাবু’ নামের গরুটি সবার নজর কেড়েছে। বিশালদেহী গরুটির রং সাদা হওয়ায় এই নাম বলে জানান মালিক বাবুল মাতব্বর। ২৭ মণ ওজনের গরুটি গত রোববার আনা হয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। এক ক্রেতা আট লাখ টাকা দাম বলেছেন। উৎসাহী শিশু-কিশোরেরা গরুটির সঙ্গে সেলফি তুলছিল। ওই হাটে প্রচুর গরু উঠেছে।

হাটের ইজারাদার তারিকুল ইসলাম জানান, এই হাটে ৬০টি সিসি ক্যামেরা, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন, তিনটি ব্যাংকের বুথসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত