[ad_1]
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে তৎকালিন বার্মায় (বর্তমান মিয়ানমার) মিত্র শক্তি ব্রিটিশ আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ হয় অক্ষ শক্তি জাপানের সৈন্যদের। ওই যুদ্ধে আহত সৈন্যদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হতো চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার ব্রিটিশ সামরিক হাসপাতালে। যুদ্ধের নিয়ম অনুযায়ী মিত্রশক্তির সৈন্যদের পাশাপাশি বিরোধী পক্ষের জাপানি সৈনিকদেরও চিকিৎসার জন্য এই দুই এলাকর সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। ওই সময়ে যেসব জাপানি সৈন্য চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান, তাদের চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রিতে কবর দেওয়া হয়েছে।
৮০ বছর পরে জাপানি সরকার তাদের সৈন্যদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিলে সাড়া দেয় বাংলাদেশ। প্রথম পর্যায়ে ২৪ জন জাপানি সেনার দেহাবশেষ ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ময়নামতি ওয়ার সেমেট্রিতে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কবর খনন শুরু হয়েছে। এজন্য জাপানের সাত সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছেছে এবং এদের মধ্যে চার জন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ।
পরবর্তী পর্যায়ে চট্টগ্রামে যেসব জাপানি সৈন্যদের কবর রয়েছে তাদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে।
কবর খনন, উত্তোলন ও স্থানান্তর কাজে পূর্বের বিশেষ অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান থাকার কারণে অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল কাজি সাজ্জাদ আলি জহিরকে (বীর প্রতীক) বাংলাদেশ ও জাপান সরকার এ কাজ সম্পাদনের জন্য নিয়োজিত করেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কবর খনন শুরু হয়েছে এবং অনুমান করা হচ্ছে আগামী ১০ দিন এই কাজ চলবে। এ পর্যন্ত ১২টি কবর থেকে দেহাবশেষ উত্তোলন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে একটি সূত্র বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বার্মা ফ্রন্টে জাপানিদের সঙ্গে ব্রিটিশ আর্মির যুদ্ধে যেসব সৈন্য আহত হয়েছিলেন, তাদের একটি অংশের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায়। যুদ্ধে জাপানি যুদ্ধবন্দিদেরও এখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।’
উল্লেখ্য আরাকান (বর্তমান রাখাইন) বা বার্মার অন্য জায়গায় আহতদের একটি অংশের চিকিৎসা করা হতো চট্টগ্রাম বা কুমিল্লায়। তৎকালিন ব্রিটিশ সরকার জুন ১৯৪৪ সালে চট্টগ্রামে ব্রিটিশ জেনারেল হাসপাতাল স্থাপন করে। ব্রিটিশ জেনারেল হাসপাতাল ময়নামতি (কুমিল্লা) স্থাপন করা হয় অক্টোবর ১৯৪৪। এছাড়া রেঙ্গুনে (বর্তমান ইয়াঙ্গুন) ব্রিটিশ জেনারেল হাসপাতাল স্থাপন করা জুন ১৯৪৫।
কবর খনন
৮০ বছর পরে মানুষের দেহ মাটির সঙ্গে মিশে গেলেও কিছু হাড় অবশিষ্ট থেকে যায়। ওই হাড়গুলো এখন উদ্ধার করার পর ডিএনএ টেস্ট করে যাচাইবাছাই করা হবে।
এ বিষয়ে একটি সূত্র বলেন, ‘এটি একটি জটিল ও দুরূহ প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে সুক্ষ্ম জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিরা ছাড়া একাজ করা সম্ভব নয়। প্রথমত জাপানি সৈন্যদের কবরগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে খনন করা এবং উদ্ধারকৃত হাড়গুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। সর্বশেষ ওই সৈন্যদের পরিবারকে খুঁজে বের করে তাদের পরবর্তী জীবিত প্রজন্মের কারও সঙ্গে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।
দেহাবশেষ জাপানে নিয়ে গিয়ে ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে তিনি জানান।
[ad_2]
Source link