Homeজাতীয়টেকসই প্রত্যাবাসনের পূর্বশর্ত রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা 

টেকসই প্রত্যাবাসনের পূর্বশর্ত রোহিঙ্গাদের অধিকার নিশ্চিত করা: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা 

[ad_1]

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, টেকসই প্রত্যাবাসনের পূর্বশর্ত হিসেবে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও রাখাইনে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এর আয়োজনে ‘বাংলাদেশের রোহিঙ্গা নীতি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের দিকে অগ্রসর হওয়া’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

সংলাপটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত হয় এবং এতে নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও, গণমাধ্যম এবং রোহিঙ্গা নেতারাসহ বিভিন্ন পক্ষ অংশগ্রহণ করেন। এই সংলাপের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় একটি সমন্বিত এবং ঐক্যবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, যা দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করেছে।

সমাপনী অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের ন্যায্য দাবিগুলো স্পষ্ট করার জন্য শক্তিশালী রোহিঙ্গা কণ্ঠের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সংকটজনিত ক্লান্তির কথা উল্লেখ করে তৌহিদ হোসেন সৃজনশীল সমাধান খুঁজে বের করার জন্য প্রধান আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডারদের নতুন করে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর এ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মতামত ও মতামতের জন্য সর্বদা উন্মুক্ত থাকার চেষ্টা করা উচিত। তিনি রোহিঙ্গা শিশুদের ফিরে যাওয়ার পর পুনঃএকত্রীকরণের জন্য প্রস্তুত করতে মিয়ানমারের পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষা প্রদানকে সমর্থন করেন। পাশাপাশি তিনি জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য ন্যূনতম স্তরের প্রতিরোধ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

প্রথম গোলটেবিল বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকটের অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মাত্রার সব প্রধান দিক নিয়ে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা হয়। সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা সংকটকে ঘিরে জটিল ভূ-রাজনৈতিক গতিশীলতা তুলে ধরেন। বক্তারা রোহিঙ্গা নীতি ও শরণার্থী নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার প্রশংসা করেন। তারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক ও শরণার্থীদের নামকরণ, বাংলাদেশ শিবিরে সেবা ও অধিকারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, রাখাইনে মানবিক করিডোরের সম্ভাবনা, মিয়ানমার ও রাখাইনের উদীয়মান স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের স্বার্থ এগিয়ে নিতে একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক জোট নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা করেন।

এ সংলাপের দ্বিতীয় রাউন্ডটেবিল অধিবেশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন। প্রধান আলোচকদের মধ্যে ছিলেন— বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শামা ওবায়েদ এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ। এছাড়া, আলোচনা পর্বে অংশ নেন— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ জাসদ এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।

অধ্যাপক শেখ তৌফিক এম হকের সঞ্চালনায় অধিবেশনে চলমান রোহিঙ্গা সংকট ও সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে ব্যাপক মতবিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বক্তারা বাংলাদেশের জন্য এই সংকটের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবিলায় একটি স্বচ্ছনীতি এবং জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি টেকসই সমাধানের জন্য জাতীয় শক্তি প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

হামিদুর রহমান আজাদ মানবিক দিকটির ওপর জোর দিয়ে রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে আচরণ করার অধিকারের পক্ষে কথা বলেন। বক্তারা সাধারণত সীমান্ত সুরক্ষিতকরণ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও অধিকারের সঙ্গে মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা সংকটটি সামগ্রিকভাবে পরীক্ষা করার এবং সংশ্লিষ্ট  স্টেকহোল্ডারদের জড়িত করার পরামর্শ দিয়েছেন।

হামিদুর রহমান আজাদ মানবিক দিকটি গুরুত্ব দিয়ে রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে আচরণের পক্ষে জোর দেন। প্যানেলের আলোচনায় সীমানা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, এবং রোহিঙ্গাদের তাদের অধিকার সুরক্ষাসহ নিরাপদে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী এসআইপিজি আয়োজিত জাতীয় সংলাপে চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই সংলাপ অন্তর্বর্তীকালীন শাসনের জন্য একটি মূল্যবান দিকনির্দেশনা দেবে এবং একটি দূরদর্শী, টেকসই সমাধানে অবদান রাখবে। সংকট নিরসনে কাজ করার সময় তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে সরকারের অন্যতম সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করেন।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত