Homeজাতীয়ডিআইএ নিয়োগ পরীক্ষার দ্রুত ফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ

ডিআইএ নিয়োগ পরীক্ষার দ্রুত ফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগ


শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) চারটি পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে বুলেট গতিতে। সকালে ৩ হাজার ১০৫ জন চাকরি প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষা নিয়ে রাতেই ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ফল প্রকাশে এমন গতি, ডিআইএ কর্তৃপক্ষ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করায় এবং খাতা মূল্যায়নের ব্যবস্থাপনায় থাকায় এই নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

ডিআইএর একাধিক কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতেই ফল প্রকাশে এত তড়িঘড়ি। তবে ডিআইএ কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রশ্নপত্র তাঁরা প্রণয়ন করলেও খাতা মূল্যায়ন করেছেন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের শিক্ষকেরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিআইএর অডিটর, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহায়ক—এই চার পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয় ৯ মে সকালে। রাজধানীর মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এই পরীক্ষা হয়। ৩ হাজার ১০৫ প্রার্থীর খাতা মূল্যায়ন করে সেদিন রাতেই ফল প্রকাশ করা হয়। এতে উত্তীর্ণ হন ১৫২ জন।

সূত্র আরও জানায়, বাকি ৭ পদের (অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, হিসাব সহকারী কাম ক্যাশিয়ার, রেকর্ড কিপার, স্টোর কিপার, ফটোকপি অপারেটর, গাড়িচালক ও নিরাপত্তাপ্রহরী) লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা ২৩ মে। পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সব মিলিয়ে ডিআইএর ১১ পদে মোট আবেদন করেন ২৪ হাজার ১১২ জন চাকরিপ্রার্থী।

ডিআইএতে জনবল নিয়োগে প্রথম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ২১ মে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১০ ধরনের পদে মোট ৩০ জনকে নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়। ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১১ ধরনের পদে ৩৩ জনকে নিয়োগের কথা উল্লেখ ছিল।

নিয়োগ কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ডিআইএর পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন এবং এসএমএস করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ডিআইএর প্রধান কাজ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা পরিদর্শন এবং নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। পরিদর্শনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা পেলে পরে প্রতিবেদনে সেগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়

ডিআইএর সূত্র বলছে, ডিআইএর তৎকালীন পরিচালক অধ্যাপক কাজী মো. আবু কাইয়ুম দায়িত্ব নেওয়ার পর পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু তাঁর বদলির কারণে ওই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। পরে ডিআইএর বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিআইএ নিজেরাই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিআইএর একাধিক কর্মকর্তা দাবি করেন, বর্তমান পরিচালকের চাকরির মেয়াদ আছে তিন মাসেরও কম। এ কারণে দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করার চেষ্টা চলছে। ডিআইএতে সাধারণত বিভাগীয় পদোন্নতি/নির্বাচন কমিটির (ডিপিসি) সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করেন উপপরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা। কিন্তু এবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন শিক্ষা পরিদর্শককে। এত অল্প সময়ে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা অসম্ভব।

অন্তত ১০ জন চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ করেন, সন্তোষজনক পরীক্ষা দিলেও উত্তীর্ণদের মধ্যে তাঁরা নেই। অনিয়মের কারণেই তাঁরা উত্তীর্ণ হননি।

তবে সবকিছু নিয়ম অনুযায়ীই হয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিটির সদস্যসচিব ও শিক্ষা পরিদর্শক মো. আফরুজ জামান। ১১ মে আজকের পত্রিকা‘কে তিনি বলেন, ‘ডিপিসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়োগের সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ কমিটিতে অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিরাও আছেন। প্রশ্নপত্র আমরা প্রণয়ন করলেও খাতা মূল্যায়ন করেছেন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের শিক্ষকেরা। আমরা শুধু ব্যবস্থাপনায় ছিলাম।’

আরও খবর পড়ুন:





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত