Homeজাতীয়তত্ত্বাবধায়কের পক্ষে রায়ে দলগুলোয় স্বস্তি

তত্ত্বাবধায়কের পক্ষে রায়ে দলগুলোয় স্বস্তি

[ad_1]

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়েছিল। তার কিছু অংশ বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। ফলে দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের যে বিধান করা হয়েছিল, তা বাতিল হয়ে গেল। তার জায়গায় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরল।

গতকাল মঙ্গলবার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে করা দুই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাত ধরে আগামীতে আবারও সুষ্ঠু নির্বাচনব্যবস্থা ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা করেছেন দলগুলোর নেতারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রমাণিত সমাধান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যত দিন ছিল, আমাদের দেশের জনগণ এক সরকারকে উঠিয়েছে, আবার নামিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়ার পরেই ফ্যাসিস্টের জন্ম হয়েছে। আমরা শুরু থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য সংগ্রাম করেছি। আজকে অনেক শহীদের রক্তের পিচ্ছিল রাস্তায় আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসল। এতে করে নিশ্চিত হলো যে দেশে সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’

এই রায়কে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলই শুধু নয়, জাতি এর পক্ষে ছিল। এই রায়ের মধ্য দিয়ে দেশের সব মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। এটা অভিনন্দনযোগ্য। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিও এই রায় শ্রদ্ধা জানিয়েছে।’

দলটির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই সরকার (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) অতীতের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনব্যবস্থাকে আবার ফিরিয়ে আনবে।’

তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনব্যবস্থা বাতিলের রায়ে স্বস্তি ফিরলেও গণতন্ত্রের পথ এখনো পুরোপুরি সুগম হয়নি বলে মনে করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরে এসেছে। তবে গণতন্ত্রের পথ সুগম হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তে এখনই যাওয়া যাবে না। এখন যেটা প্রয়োজন, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক এবং তারপরে যে প্রধান বিচারপতি—এই দুজনকে শাস্তির মুখোমুখি করা। তাহলে বলা যাবে যে পথটা (গণতন্ত্রের জন্য) সুগম হয়েছে, যাতে করে পরে কেউ আর কাগজে-কলমে যা খুশি তাই লিখে জাতিকে জিম্মি করতে পারবে না।’

উচ্চ আদালতের রায়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের মাধ্যমে জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীও। গতকাল এক বিবৃতিতে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোট ও নির্বাচনব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছিল। এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিনা ভোটে ক্ষমতা দখলের প্রবণতা তৈরি হয়। ফলে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে মাত্র। মূলত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের উচ্চ আদালতের রায়ে জনগণের অধিকার পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হলো। এটি জনগণের আরেকটি বিজয়।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জনগণের অভিপ্রায় হচ্ছে সংবিধান। সংবিধানে কোনো কিছু অপরিবর্তনীয় রাখা উচিত নয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে দীর্ঘদিন জনগণকে অধিকার বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে যে রায় হয়েছে, তা যথার্থই হয়েছে।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা রায়টাকে স্বাগত জানাই। জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী করা হয়েছিল। গণভোটের বিধান বাতিল করা হয়েছিল। জনগণের প্রত্যাশা অনুসারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে। এখন এটা কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন। প্রথমত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে ফিরবে, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। দ্বিতীয়ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ক্ষমতাকাল কী হবে, তাদের এখতিয়ারের সীমারেখা কী হবে। তৃতীয়ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচিত পরবর্তী সরকারের কাছে জবাবদিহি করবে কি না। জবাবদিহির বিধান থাকা উচিত বলে মনে করি। চতুর্থত, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার হিসেবে কাজ করবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন।’



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত