Homeজাতীয়নারী কোটা থাকছে না প্রাথমিকে

নারী কোটা থাকছে না প্রাথমিকে

[ad_1]

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটা থাকছে না। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, কোটা থাকবে মাত্র ৭ শতাংশ। বাকি ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে।

প্রস্তাবিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫-এর খসড়ায় এমন বিধান থাকছে। খসড়া থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার আগের মতো বিভাগ ধরে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে চায়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) সূত্র জানায়, নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত হলে আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতে পারে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সহকারী শিক্ষকের নিয়োগযোগ্য শূন্য পদ ৮ হাজারের বেশি। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় পদসংখ্যা বাড়তে পারে। প্রস্তাবিত বিধিমালায় উচ্চ আদালতের রায়ের পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ৭ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা অনুসরণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সর্বশেষ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ-বিধি, ২০১৯-এ বলা হয়েছে, সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদের ৬০ শতাংশ মহিলা প্রার্থী, ২০ শতাংশ পোষ্য প্রার্থী এবং অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করা হবে। অবশ্যই ২০ শতাংশ স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

জানতে চাইলে গত ২৮ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন হচ্ছে—আগের কোটা ব্যবস্থা বাদ দিয়ে উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী কোটা ব্যবস্থা চালু। এর বাইরে আরও কিছু বিষয় পরিবর্তন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া সাপেক্ষে শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা করা।

এর ফলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে মহিলা কোটা কি বাদ যাবে, এমন প্রশ্নে এই উপদেষ্টা বলেন, মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ—কোনো কোটাই থাকবে না।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১ কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৫ জন। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ শিক্ষক ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৯ জন এবং মহিলা শিক্ষক ২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৭০ জন।

২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো বিভাগ ধরে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তিন ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ করা হয় আলাদাভাবে। এই নিয়োগেও ২০১৯ সালের নিয়োগবিধির কোটা ব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়। এতে চূড়ান্ত নিয়োগ পান ১৪ হাজার ৪৮৪ জন প্রার্থী।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে আন্দোলনে নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন; যা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ওই আন্দোলনের মধ্যেই হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে মেধায় ৯৩ শতাংশ এবং কোটায় ৭ শতাংশ নিয়োগের নিয়ম রেখে গত বছরের ২৩ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ওই ৭ শতাংশ কোটার মধ্যে রয়েছে—বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ।

কোটার দাবিতে শুরু হওয়া ওই আন্দোলন একসময় রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এর ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার।

এদিকে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে কোটা পদ্ধতি প্রয়োগের বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গত ২৫ মার্চ একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে (বিধি অনুবিভাগ)। কমিটিকে আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অবশ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় কিছু কোটা রাখা যেতে পারে বলে মনে করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান অবস্থার নিরিখে কোটা বাদ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় বিশেষ এলাকা ও জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। কারণ, চর, হাওর, পাহাড়ি ইত্যাদি অঞ্চলে যোগ্য শিক্ষকই পাওয়া যায় না।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের নিয়োগযোগ্য শূন্য পদের সংখ্যা ৮ হাজার ৪৩টি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় অবসরজনিত শূন্য পদের সংখ্যা বাড়তে পারে। এ ছাড়া সংগীত, শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের জন্য ৫ হাজার ১৬৬টি এবং চারুকলা বিষয়ে ৫ হাজারের বেশি পদ সৃষ্টির কাজ চলছে।

নিয়োগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সহকারী শিক্ষক, সংগীত, শারীরিক শিক্ষা ও চারুকলা মিলিয়ে এবার অন্তত ১৮ হাজার শূন্য পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। তবে অবসরজনিত শূন্য পদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। সর্বশেষ নিয়োগের মতো এবারও বিভাগ ধরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, তাঁরা আশা করছেন আগামী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ চূড়ান্ত হবে। সেই হিসাবে বলা যায়, সব প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা সম্ভব হবে।

সূত্র বলছে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা ছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯ হাজার ৫৭২টি সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব পদ পূরণ করা হবে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত