চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৫৯৮ জন মারা গেছে। মৃত্যুর তালিকায় ছিল ৭২৯ শিশু ও ৬৭৭ নারী। পেশার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ৬৮৭ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে এ বছর। এদিকে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের ২০২৩ সালের গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছর দেশে ১ হাজার ১২৮ শিশু প্রাণ হারিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়। অর্থাৎ প্রতিদিন সড়কে তিনটির বেশি শিশুর প্রাণ যাচ্ছে। শিশু-কিশোর সংগঠন ‘বিহঙ্গ’ গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। সড়কে শিশুমৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনের সম্পাদক তানজিনা বেগম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মূল সড়কে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস এবং আঞ্চলিক সড়কে অটোরিকশা কিংবা স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন নছিমন বা ভটভটির ধাক্কা বা চাপায় এসব হত্যার ঘটনা ঘটছে। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের আঞ্চলিক সড়কগুলোয় গত বছর সবচেয়ে বেশি শিশু মারা গেছে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে। শিশুরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার সময় এবং বসতবাড়ির আশপাশের সড়কে চলাচলের সময় নিহতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। অথচ বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় না।
এতে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুদিন পরপর থ্রি-হুইলার অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ জারি হলেও তা কার্যকর সমাধান নয়। মুনাফার স্বার্থে বিপুল পরিমাণ ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও যন্ত্রাংশ আমদানি করে এ সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। আবার আমদানির পর যানবাহন সংস্কার না করে কথিত উচ্ছেদের প্রক্রিয়া নতুন সংকট সৃষ্টি করছে। দেশে অনিবন্ধিত অটোরিকশা ৭০ লাখের বেশি। বিপুল মানুষের জীবন-জীবিকা অটোরিকশার সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়ায় এই যানবাহন বন্ধ করে বিশেষ কোনো সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বিকল্প সমাধানে সরকারের তৎপরতা জরুরি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালককে ন্যূনতম এক সপ্তাহের সড়ক আইনকানুন, ট্রাফিক চিহ্ন, সড়কে অটোরিকশা চলাচল ইত্যাদি বিষয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। প্রশিক্ষণ সমাপ্তকারীদের নামমাত্র ফি নিয়ে অটোরিকশা চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে। কোনো অদক্ষ, অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক অটোরিকশা চালাতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে অবিলম্বে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।