Homeজাতীয়মাত্র ‘এক ধাপ দূরে’ আরেক মহামারি, বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা

মাত্র ‘এক ধাপ দূরে’ আরেক মহামারি, বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা

[ad_1]

চীনে সম্প্রতি আবিষ্কৃত একটি নতুন করোনাভাইরাস নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন গবেষকদের মতে, HKU5-CoV-2 নামের এই ভাইরাসটি মানুষকে সংক্রমিত করার ক্ষমতা অর্জনের মাত্র একটি ছোট মিউটেশনের (জিনগত পরিবর্তন) দূরত্বে রয়েছে, যা শুরু করতে পারে আরেকটি বৈশ্বিক মহামারি।

গবেষণায় উঠে এসেছে, এই ভাইরাসটি মারাত্মক MERS-CoV-এর (মধ্যপ্রাচ্য রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। MERS ভাইরাসের মৃত্যুহার প্রায় ৩৪ শতাংশ — অর্থাৎ এটি যাদের সংক্রমিত করে, তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের মৃত্যু ঘটে।

মাত্র একটি মিউটেশনেই মানুষে সংক্রমণের সম্ভাবনা: বিজ্ঞানীদের দাবি

ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক মাইকেল লেটকো বলেন, ‘HKU5 ভাইরাসগুলো নিয়ে এতদিন তেমন গবেষণা হয়নি। কিন্তু আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, এরা মানুষের কোষে প্রবেশ করতে পারে — শুধুমাত্র একটি ছোট মিউটেশন ঘটলেই।’

এই মিউটেশন ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিনকে পরিবর্তিত করে, যাতে এটি মানবদেহের গলা, মুখ ও নাকের কোষে থাকা ACE2 রিসেপ্টর-এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। ACE2 হচ্ছে সেই প্রবেশদ্বার, যা দিয়ে SARS-CoV-2 (কোভিড-১৯) ভাইরাসও মানবদেহে প্রবেশ করে।

শুরুটা বাদুড় থেকে, এবার লক্ষ্য মানুষ?

গবেষকরা HKU5-CoV-2 ভাইরাস সংগ্রহ করেছেন দক্ষিণ ও পূর্ব চীনের বিভিন্ন অঞ্চলের বাদুড়ের শরীর থেকে। বর্তমানে এটি বাদুড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও, অবৈধ বন্যপ্রাণী বাজার ও অনিয়ন্ত্রিত প্রাণী বাণিজ্যের কারণে ভাইরাসটির ‘স্পিলওভার’ বা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশের ঝুঁকি বাড়ছে।

ল্যাব-পরীক্ষায় গবেষকরা ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করে ‘ছদ্ম-ভাইরাস’ তৈরি করেন। এসব ভাইরাস মানুষের ও বাদুড়ের কোষে প্রবেশের ক্ষমতা দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। দেখা যায়, বাদুড়ের কোষে এটি সহজেই প্রবেশ করে। তবে মানুষের কোষে প্রবেশ করতে গেলে ভাইরাসটিকে নির্দিষ্ট জিনগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

ওয়াশিংটনের গবেষণার পেছনে ছায়া ফেলছে উহানের অতীত

HKU5 ভাইরাসটি প্রথম পাওয়া যায় চীনের সেই গবেষণাগারে, যেখান থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই আলোচিত। এই কারণে নতুন ভাইরাসটির আবিষ্কার আরও বেশি উদ্বেগ তৈরি করেছে।

FBICIA-এর মতে, কোভিড-১৯ সম্ভবত উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি থেকে লিক হয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তবে একটি বিকল্প তত্ত্ব অনুসারে, চীনের একটি ‘ওয়েট মার্কেট’-এ থাকা একাধিক প্রজাতির প্রাণী ছিল মধ্যবর্তী বাহক — যেখান থেকে ভাইরাসটি মানুষে ছড়ায়।

Lineage 2 : হুমকি আরও ঘনিয়ে আসছে?

চীনের বিজ্ঞানীরা এ বছরের শুরুর দিকে দাবি করেছিলেন, HKU5 ভাইরাসের Lineage 2 নামক একটি স্ট্রেইন ইতিমধ্যে মানবদেহের ACE2 রিসেপ্টর-এ যুক্ত হতে পারে। এটি হলে ভাইরাসটির মানুষে সংক্রমণের জন্য বাড়তি বিবর্তনের প্রয়োজন পড়বে না।

বর্তমানে, মার্কিন গবেষকরা শুধু Lineage 2 নয়, বরং MERSHKU5-এর আরও বহু রূপের ওপর গবেষণা চালাচ্ছেন, যাতে বোঝা যায় এই ভাইরাসগুলো ঠিক কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

বিজ্ঞানীদের বার্তা: নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে

‘এই ভাইরাসগুলো MERS-এর খুব কাছাকাছি, তাই এদের মানুষে সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে,’ বলেন অধ্যাপক লেটকো। ‘এখনো পর্যন্ত প্রমাণ নেই যে HKU5-CoV-2 মানুষে ছড়িয়েছে, কিন্তু সম্ভাবনা রয়েছে — আর সে কারণেই আমাদের নজর রাখতে হবে।’

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখনই আতঙ্কিত না হলেও HKU5-CoV-2-এর মতো ভাইরাসের ওপর নিয়মিত নজরদারি, গবেষণা ও জনসচেতনতা বাড়ানো ছাড়া ভবিষ্যতের মহামারি ঠেকানো সম্ভব নয়।

 

 

সূত্র: ডেইলি মেইল।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত