Homeজাতীয়মুরগির বিষ্ঠায় পরিবেশ দূষণ, অতিষ্ঠ গড়গড়ার সাধারণ মানুষ

মুরগির বিষ্ঠায় পরিবেশ দূষণ, অতিষ্ঠ গড়গড়ার সাধারণ মানুষ


রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট পৌরসভার গড়গড়া গ্রামের নাবিল গ্রুপের মুরগির খামারের বিষ্ঠায় ও অন্যান্য বর্জ্য খোলা স্থানে ফেলার কারণে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন খামার থেকে বিপুল পরিমাণ মুরগির বিষ্ঠা ও বর্জ্য কোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াই গ্রামের খাড়িতে ফেলা হচ্ছে। এতে খাড়ির পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে তীব্র দুর্গন্ধ। ফলে আশপাশের পরিবেশ হয়ে উঠেছে দূষিত ও বসবাসের অনুপযোগী।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, খামার কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলা হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং অভিযোগ করার পর থেকে বর্জ্য ফেলার পরিমাণ আরও বেড়েছে। আগে এসব বর্জ্য রাজশাহীর বাইরে ট্রাকে করে সরিয়ে নেওয়া হতো। কিন্তু এখন পরিবহন খরচ বাঁচাতে কিছু অসাধু ব্যক্তি গভীর রাতে—প্রায় রাত ১টা থেকে ৩টার মধ্যে—গ্রামের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে খাড়ির পানিতে, এসব বর্জ্য ফেলে পালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েকজন গাড়িচালকের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

কৃষকরা জানান, বিষাক্ত এসব বর্জ্য রাতারাতি কৃষিজমিতে ফেলে আবাদি ফসলের ক্ষতি করছে। খাড়ির পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করলেও বর্তমানে তা ব্যবহারযোগ্য নেই। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও মুক্তি মিলছে না। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে শিশু ও বৃদ্ধরা। অনেকেই শ্বাসকষ্ট, ত্বকের সমস্যা ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। শুধু গড়গড়ার সাধারণ মানুষ নয় এই বর্জ্যে অতিষ্ঠ হয়েছে, বিলাসী খাড়ী, বিলাসী গ্রাম,ঋষিকুল ইউনিয়ন, গোদাগাড়ী থানার বাসিন্দারা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, “এই ধরনের বর্জ্য যখন পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে, তখন তা বায়ু দূষণের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ায়। এসব জীবাণু পশু-পাখি ও মানুষের নানা ধরনের রোগের কারণ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এটি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে দেবে।”

এ বিষয়ে গোদাগাড়ী থানার ঋষিকুল ইউনিয়নে নাবিল পোল্ট্রি ফার্ম নাভার জেনারেল ম্যানেজার সালাম বলেন, “আমরা বিষয়টা জেনেছি, আমাদের থার্ড-পার্টি কে চুক্তি দেওয়া আছে। তারা আমাদের ফার্ম গেটের বাইরে বের হলে আমাদের দেখার দায়িত্ব নেই। কিন্তু
পরিবেশর স্বার্থে আমরা একাধিকবার তাদের সাথে বলেছি, তারা বলেছে সমাধান করে ফেলবে।”

নাবিল গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজার (অ্যাকাউন্টস) মো. বেলাল হোসেন বলেন, “এটা ঠিক যে আমরা নিজেরা বর্জ্য ফেলি না, বরং থার্ড পার্টির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। তাদের পরিষ্কারভাবে বলা আছে, আশপাশে কিংবা খোলা স্থানে ফেলা যাবে না। তারা চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরও করেছে। যদি তারা এসব শর্ত ভঙ্গ করে, তবে আমাদের চুক্তি বাতিল করতে হবে এবং অন্য পক্ষের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন কাজ আর করবে না, এমনকি হয়ে থাকলেও পরিষ্কার করে ফেলবে। আমরা চাই না পরিবেশ বা মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। আমাদের ব্যবসাও যেন টিকে থাকে এবং মানুষ উপকৃত হয়।”

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. কবির হোসেন বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি এবং কাজ শুরু হয়েছে। আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দিয়েছি। তারা জানিয়েছে, কাজ প্রক্রিয়াধীন। যদি তারা সমাধান না করে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত