মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মঙ্গলবার জানিয়েছেন, তিনি এখন পর্যন্ত সম্ভবত হাজার হাজার ভিসা বাতিল করেছেন। তবে তিনি মনে করেন, এখনও অনেক কিছু করার বাকি আছে।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অভিবাসন সংক্রান্ত কড়া অবস্থান বাস্তবায়নে শিক্ষার্থী এবং দর্শনার্থীদের ভিসা বাতিল এবং বহিষ্কারের প্রক্রিয়া জোরদার করছে।
রুবিও এক সিনেট সাবকমিটিতে বলেন, “সঠিক সংখ্যা এখন জানি না, তবে অনুমান করছি এটা এখন হাজারে গিয়ে পৌঁছেছে।” মার্চ মাসে তিনি বলেছিলেন, সে সময় পর্যন্ত ৩০০-এর বেশি ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার জানানো সংখ্যাটি তার চেয়ে অনেক বেশি।
রুবিও জানান, এই ভিসাগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী এবং দর্শনার্থী—দুই ধরনের ভিসাই রয়েছে এবং তিনি প্রত্যেকটি সিদ্ধান্তে নিজে স্বাক্ষর করেছেন।
“ভিসা কোনো অধিকার নয়, এটা একটি সুবিধা,” বলেন রুবিও।
ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানানোর অভিযোগে অনেক শিক্ষার্থী ও গ্রিন কার্ডধারীকে যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের ‘প্রো-হামাস’ ভাবধারার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
এই পদক্ষেপকে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্টে নিশ্চিত করা মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন।
ডেমোক্রেট সেনেটর জেফ মার্কলি শুনানিতে বলেন, “আমার কাছে এটা গভীরভাবে উদ্বেগজনক যে, কারও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য আচরণ বা চিন্তার ভিত্তিতে, একজন ব্যক্তি তাদের ভিসা বাতিল করতে পারেন। এটা বিচার প্রক্রিয়ার একটি চরম লঙ্ঘন।”
এই মাসের শুরুতে তুরস্কের এক ছাত্রী, যিনি ম্যাসাচুসেটসের টাফটস ইউনিভার্সিটিতে পড়েন, তাকে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সমালোচনা করে লেখা একটি মতামতপ্রবন্ধের জন্য ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় লুইজিয়ানার একটি ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে আটক রাখা হয়। পরে এক বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এই ছাত্রী, রুমাইসা ওজতুর্ক, এখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রো-ফিলিস্তিনি কর্মীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের শুরু করা বিতাড়ন অভিযানের অন্যতম আলোচিত মুখ।
এই ঘটনা ও ভিসা বাতিলের ঢেউ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে উদ্বেগ ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে — বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক মহলে।