Homeজাতীয়হাতে থাকা আপেলটিও খেতে দেওয়া হয়নি শিশু মুনতাহাকে

হাতে থাকা আপেলটিও খেতে দেওয়া হয়নি শিশু মুনতাহাকে

[ad_1]

ছয় বছরের ছোট্র শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন তারই সাবেক গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫)। মুনতাহার মরদেহ উদ্ধারের পর ঘাতক মার্জিয়ার ঘর মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। ঘরের জিনিসপত্র এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তবে সবার নজর তাদের ঘরের পাশে মরদেহ গুমের পার্শ্ববর্তী স্থানে পড়ে থাকা একটি আপেলকে কেন্দ্র করে। পুকুরের পাড়ে পড়ে থাকা আপেলের দিকে তাকিয়ে অনেকে আফসোস করছিলেন আর মুনতাহাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছিলেন।

গত ৩ নভেম্বর নির্মমভাবে খুন করা হয় শিশু মুনতাহাকে। সে কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। মুনতাহাকে হত্যার পর প্রায় ১ সপ্তাহ মরদেহ গুম করে রেখেছিল ঘাতকরা। এরপর রোববার (১০ নভেম্বর) ভোররাতে মুনতাহার বাড়ি থেকে মাত্র ১০ গজের মধ্যে পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার হলে তোলপাড় শুরু হয় দেশজুড়ে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নিখোঁজ হওয়ার আগে বাবা শামীম আহমদের সঙ্গে শেষবারের মতো গ্রামের একটি ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিল শিশু মুনতাহা। জোহরের ওয়াক্ত হওয়ায় মেয়েকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসেন শামীম আহমদ। বাসায় মেয়েকে রেখে তিনি চলে যান মসজিদে। পরে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দুটি সবুজ রঙয়ের আপেল হাতে নিয়ে বের হয়েছিল মুনতাহা। এরপর থেকেই আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষমেষ মরদেহ উদ্ধারের পর ঘাতক মার্জিয়ার ঘর ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেন স্থানীয়রা।

মুনতাহার কথা বলতে গিয়ে প্রতিবেশী আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, মুনতাহার স্মৃতি আমার চোখ থেকে সরছে না। সে প্রতিদিনই আমার বাসায় আসতো। আমার নাতি ছিলো তার খেলার সাথী। সে অনেক মিষ্টি কথা বলতো। অনেক মায়াবী একজন মানুষকে এভাবে কেউ মেরে ফেলবে এইটা আমি কল্পনা করতে পারিনি। মেয়েটা দুইটা আপেল খাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছিল। একটি আপেলে কিছুটা অংশ খেয়েছিল। আরেকটা আপেল আস্ত ছিল। দুইটি আপেলই ঘাতকদের ঘরে ছিল। এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আমার বাড়ির পুকুরে মরদেহ ফেলার পাঁয়তারা করেছিল ঘাতকরা। আল্লাহর মেহেরবানিতে খুনি মরদেহসহ গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে। আমি এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।

মুনতাহার বাবা শামীম ঢাকা বলেন, আমি এক হতভাগ্য বাবা। আমার মেয়েকে এভাবে মেরে ফেলবে এইটা আমার চিন্তায় আসেনি। যে মেয়েটি মুনতাহাকে খুন করেছে সে মুনতাহাকে কয়েকমাস পড়িয়েছিল। সে যে এই রকম করবে এইটা জানতাম না। আমার মেয়েটা আপেল নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছিল। সেইটাও আমার মেয়ে খেতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরে শিশু মুনতাহা। দুপুরের দিকে বাড়ির পাশে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু বিকেলে বাড়ি না ফিরলে তার পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও তাকে পাননি।

পরবর্তীতে গত শনিবার (৯ নভেম্বর) কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ মামলা করা হয়। এরপর রোববার ভোররাতে বাড়ির পাশে খাল থেকে মুনতাহার মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ সেটাকে হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে চারজনকে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার স্ত্রী আলিফজান (৫৫) ও মেয়ে শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫), একই এলাকায় ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগম (৩৫)। সোমবার (১১ নভেম্বর) তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।



[ad_2]

Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত