ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা দলটি নিষিদ্ধের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে সবাইকে যমুনার সামনে আসতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আহ্বান জানান এনপিসি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তারপর এনসিপির এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমও তাদের নিজ নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে যমুনার সামনে আসার আহ্বান জানান।
এনসিপির শীর্ষ নেতার ডাকে সাড়া দিয়ে যমুনার সামনে রাত ১০টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহর নেতৃত্বে জড়ো হয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
তাদের সবার দাবি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা। তারা বলছেন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ করলেই চলবে না; গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
রাত পৌনে ১০টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত আজ রাত দশটা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচী চলবে। যার এজেন্ডায় গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট বয়ান নাই, তার সাথে আমরা নাই।”
রাত ১০টা ২৪ মিনিটে দেওয়া এক পোস্টে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি ফ্যাসিস্ট ও খুনী আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। আসামীদের জামিন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবৈধ ফ্যাসিস্ট সরকারের রাষ্ট্রপতিকে চোখের সামনে পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। বিচার প্রশ্নে সরকারের প্রতি আমাদের অনাস্থার যায়গা তৈরি হইছে।”
তিনি বলেন, “জুলাইয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল খুনীদের বিচার এবং মুজিববাদীরা বাংলার মাটিতে আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না। আজ রাতেই ফয়সালা হবে আওয়ামী লীগের বিষয়ে। আওয়ামী লীগের বিচার, নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ থেকে উঠবো না।”
তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, “সবাই চলে আসুন। জুলাইয়ে সকল শক্তি, সকল শহীদ পরিবার ও আহতদের আহ্বান জানাই রাজপথে নেমে আসুন। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।”
নাহিদের এই ফেসবুক পোস্টটি হাসনাত আবদুল্লাহ শেয়ার দেন। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অপর একটি পোস্টে হাসনাত বলেন, “যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইসিটিতে দল হিসেবে বিচার করার বিধান যুক্ত করতে হবে।”
সর্বশেষ দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি জুলাইয়ের সব শক্তি আবার ঐক্যবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন।
কর্মসূচি চলাকালে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরেকটি পোস্ট দেন। তিনি সেখানে বলেন, “যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইসিটি আইনে দল হিসেবে বিচার করার বিধান যুক্ত করতে হবে।”
এছাড়া রাত সোয়া ১০টার দিকে সারজিস আলম একটি ফেসবুক পোস্টে বলেন, “হাসনাতের সাথে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচীতে যোগ দিন। নয় মাসে সোজা আঙ্গুলে কাজ হয়নি। এখন সময় আঙ্গুল বাঁকা করার।”