[ad_1]
ইউক্রেন মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য একটি বৈঠকে ন্যাটোর সদস্যপদের আমন্ত্রণ পাবে বলে আশা করছে। তবে কিয়েভের এমন আহ্বানে ন্যাটোর সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কূটনীতিকদের মতে, পশ্চিমা সামরিক এই জোটটি কিয়েভের এমন রাজনৈতিক আশার গুড়ে বালি দিতে পারে। কেননা, একে তো দেশটি যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করছে এবং নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে ফিরে আসছেন, নির্বাচনি প্রচারণায় যিনি একাধিকবার এই যুদ্ধে মার্কিন সহায়তার সমালোচনা করেছেন ও এটি দ্রুত অবসানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
বৈঠকের আগে, ন্যাটো সমকক্ষদের কাছে একটি চিঠিতে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেছেন, কেবল একটি আমন্ত্রণই পারে রাশিয়ার যুদ্ধ চালানোর প্রধান যুক্তিগুলোর একটিকে অকেজো করে দিতে—ইউক্রেনকে জোটে যোগদান থেকে রাশিয়ার বিরত রাখার ইচ্ছা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কূটনীতিকরা বলেছেন, তবে ব্রাসেলসে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ন্যাটোর ৩২ সদস্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় ঐকমত্যের কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
সোমবার ন্যাটোর একজন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক বলেন, ‘ঐকমত্য পেতে কয়েক সপ্তাহ ও মাস লাগবে। আমি আগামীকাল এমনটি ঘটবে বলে মনে করছি না। এমনটি হলে আমি খুবই অবাক হব।’
একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, বৈঠকটিতে ইউক্রেনের জন্য সমর্থন বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ রা হবে যাতে এটি আগামী বছর ‘সম্ভাব্য আলোচনায়’ সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি করার সর্বোত্তম উপায় হলো অর্থ, যুদ্ধাস্ত্র ও সংহতি বৃদ্ধি করা।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার ইউক্রেনের জন্য ৭২৫ মিলিয়ন ডলারের একটি নতুন অস্ত্র প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।
ন্যাটো সদস্যপদকে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার সর্বোত্তম গ্যারান্টি হিসেবে দেখে ইউক্রেন। ন্যাটোর ৫ নং অনুচ্ছেদ পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তির অধীনে, ন্যাটোর যেকোনও সদস্য রাষ্ট্রের ওপর আক্রমণকে জোটের সবার ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করতে ও একে-অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসতে অনুমতি দেয়।
শুক্রবার স্কাই নিউজে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পরামর্শ দিয়েছিলেন, বর্তমানে তার সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটিকে ‘ন্যাটোর ছাতার নীচে’ আশ্রয় দিলে যুদ্ধের ‘উত্তপ্ত পর্ব’ বন্ধ হবে।
তার এই মন্তব্যটি এমন সময় এসেছে যখন যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেন কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে আর এদিকে, মস্কোর সেনার দেশটির পূর্বাঞ্চলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
যদিও ন্যাটো ঘোষণা করেছে যে, ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদান করতে পারবে ও ন্যাটোতে দেশটির পথ ‘অপরিবর্তনীয়’। তবে এটি এখনও দেশটিকে একটি আমন্ত্রণ পাঠায়নি বা সদস্যতার জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়নি।
এই জাতীয় যে কোনও সিদ্ধান্ত সর্বোপরি ন্যাটোর প্রধান শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করবে। আর তাই, আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর তার প্রথম কাজই হবে এই ইস্যুটির সমাধান করা।
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনের ওপর যে কোনও বড় পদক্ষেপের একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়েছে। আর তাই সেটি নিশ্চিত করায় আদর্শভাবে আগত সরকারের সমর্থন থাকা উচিত।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ও তার উত্তরসূরি মাইক ওয়াল্টজের মধ্যে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হওয়া আলোচনার বিষয়গুলোর একটি ছিল ইউক্রেন। তবে বিদায়ী ও আগত প্রশাসনের মধ্যে প্রান্তিককরণের স্তরটি অস্পষ্ট রয়ে গেছে।
কিয়েভের জন্য মার্কিন সাহায্যের মাত্রার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ক্ষমতায় এলে ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ যুদ্ধ শেষ করবেন তিনি। তবে কীভাবে তিনি এই সংঘাতের মোকাবিলা করবেন সে পরিকল্পনার বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
কূটনীতিকদের মতে, হাঙ্গেরির মতো কিছু ন্যাটো সদস্য প্রকাশ্যে ইউক্রেনের জোটে যোগদানের বিরোধিতা করেছে। তবে বর্তমান মার্কিন ও জার্মান সরকারের মতো অন্য কয়েকটি দেশও এই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তারা সময়টিকে সঠিক মনে করছে না।
[ad_2]
Source link