অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আজকের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছে বাংলাদেশের মানুষ। এই বৈঠক থেকে আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাবেন দুই নেতা, এমন প্রত্যাশা সবার। একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই জনের মধ্যে বৈঠকের শেষ পর্যায়ে দুই পক্ষ থেকে দুই বা তিন জন যুক্ত হতে পারেন। এখন পর্যন্ত দুই জনের মধ্যে বৈঠকটি শুরু হওয়ার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সম্মত হলে তাতে মত দিতে পারে বিএনপিও। তারেক রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনও সরকার প্রধানের সঙ্গে এটিই প্রথম বৈঠক।
শুক্রবার (১৩ জুন) সকালের বৈঠক নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান দুই পক্ষেরই বৃহস্পতিবার শেষ মুহূর্তের তৎপরতা অব্যাহত ছিল।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক ভিডিও ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এই বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের সামনের রাজনৈতিক বাস্তবতার জন্য। একজন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান, অন্যজন দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধান। তারা সব কিছু নিয়েই আলাপ করবেন। মিটিংয়ের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার একজন অফিসিয়ালও এসেছিলেন, তার সঙ্গেও কথা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি সকাল ৯টার মধ্যেই উনারা আসবেন। আসার পরে ওয়ান টু ওয়ান মিটিং হবে। উনারা যদি মনে করেন আর কেউ থাকবেন, সেটা উনারাই ঠিক করবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বুধবার (১১ জুন) লন্ডনে পৌঁছেছেন। খবরটি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক ওয়ান টু ওয়ান হবে নাকি দুই পক্ষেই আরও এক বা দুই জন করে থাকতে পারেন তা নিয়ে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়।
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও ওয়ান টু ওয়ান মিটিং হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরভেজ মল্লিক বলেন, ‘সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ওয়ান টু ওয়ান মিটিং হোক। ওয়ান টু ওয়ান মিটিং হওয়ারই সম্ভাবনা।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার যেহেতু আমন্ত্রণ জানিয়েছে মিটিংয়ের পর সরকারের পক্ষ থেকেই মিটিংয়ের ফলাফল জানানো হবে।’
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিছবাউজ্জামান সোহেল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি তাদের দুই জনের মধ্যেই বৈঠক হবে। যদি সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কেউ থাকেন বা প্রয়োজন অথবা প্রেক্ষাপট তৈরি হয় বিএনপির পক্ষ থেকে সে কারণেই হয়তো আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী লন্ডনে এসেছেন।’
তিনি আরও জানান, সভাস্থলের বাইরে সভাকে স্বাগত জানাতে অন্তত হাজার খানেক নেতাকর্মী জড়ো হবেন।
ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক শুরু হওয়ার কথা লন্ডনের স্থানীয় সময় আজ সকাল ৯টায়। সেন্ট্রাল লন্ডনের পার্ক লেনের ডরচেস্টার হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে এই বৈঠক।
নিরব থাকবে আওয়ামী লীগ
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফরকালীন সময়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখা সর্বত্র প্রতিরোধের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে মাঠে থাকলেও আজ ইউনূস-তারেক বৈঠককালীন সময়ে কোনও কর্মসূচি রাখছে না। এ বৈঠকটি ছাড়া ড. ইউনূসের বাকি সব কর্মসূচি স্থলের বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তারা।
শুক্রবার সকালে কোনও কর্মসূচি না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।