রানী হামিদের সঙ্গী হয়ে দিল্লি যাচ্ছিলেন আশিয়া সুলতানা। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে জানতে পারলেন বাংলাদেশি এ দাবাড়ু ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কালো তালিকাভুক্ত! এ নিয়ে অনেক দেনদরবার হলো। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হলেন ভারতীয় দাবা ফেডারেশন কর্মকর্তারাও। তাতেও রেহাই মেলেনি—ভারতে প্রবেশ করতে না পেরে ঢাকায় ফিরে আসতে বাধ্য হন আশিয়া সুলতানা।
ঘটনা ৬ জুনের, ঈদের ছুটি চলাকালীন সময়ের। বাংলাদেশের দুই নারী দাবাড়ু—রানী হামিদ ও আশিয়া সুলতানা যাচ্ছিলেন ‘২১তম দিল্লি আন্তর্জাতিক ওপেন গ্র্যান্ডমাস্টার দাবা টুর্নামেন্ট’ খেলতে। আশিয়া সুলতানা ভারতীয় ইমিগ্রেশনের ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও) কালো তালিকাভুক্তির কারণ, তিনি মেডিকেল ভিসায় গিয়ে কলকাতার এক প্রতিযোগিতায় খেলে এসেছেন। এ সম্পর্কে বাংলাদেশি ওই দাবাড়ু কালবেলাকে বলছিলেন, ‘আমার মেডিকেল ভিসা ছিল। ওই ভিসায় ভারত গিয়েছিলাম। একই সময়ে কলকাতায় এক প্রতিযোগিতায় ছিল। আমি সেখানে অংশগ্রহণ করেছি।’
দিল্লি যাওয়ার পথে ইমিগ্রেশন হাউসে এক রাত আটকে রাখা হয়েছিল আশিয়া সুলতানাকে। পরে বাধ্য হয়ে ফিরতি টিকিট কেটে ঢাকায় ফিরতে হয়েছে ১৫৭১ রেটিংধারী বাংলাদেশি ওই দাবাড়ুকে।
এ প্রসঙ্গে আশিয়া সুলতানা বলছিলেন, ‘ভারতীয় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আমার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা অবশ্য বেশ আন্তরিক ছিলেন। তাদের সহায়তায় আমি ফিরতি টিকিট করে ঢাকায় ফিরতে পেরেছি।’ ভারতের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নিয়মিত খেলা আশিয়া সুলতানা আরও বলেন, ‘আমাকে আটকে দিলেও আমার লাগেজ সঙ্গে ছিল না। লাগেজে আমার অর্থকড়ি এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছিল। যেগুলো আমাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ বিড়ম্বনার পর ফিরতি টিকিট করতে হয়েছে ঢাকা থেকে।’
আশিয়া সুলতানাকে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানোয় বিড়ম্বনায় পড়েন বর্ষীয়ান দাবাড়ু রানী হামিদও। বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মাস্টারের বয়স ৮০ বছর। এ কারণে একা চলাফেরা করতে পারেন না বাংলাদেশের ‘দাবার রানী’। দিল্লি আন্তর্জাতিক ওপেনে তাকে সঙ্গ দেওয়ার কথা ছিল আশিয়া সুলতানার। এ ঘটনায় বিরক্ত রানী হামিদ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভারতীয় প্রভাবশালী এক গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি কখনো একা ভ্রমণ করি না। আমার সঙ্গে সবসময় কেউ না কেউ থাকে। সে (আশিয়া সুলতানা) আমার সঙ্গী ছিল। আমাকে একা ফেলে যাওয়া হয়েছে। আমি দাবা বোর্ডে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছি না।’