প্রায় চার মাস লন্ডনে চিকিৎসাধীন থাকার পর আগামীকাল মঙ্গলবার দেশে আসছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা দিতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের নেতারা।
কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে মঙ্গলবার (৫ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি। খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শারমিলা রহমান তার সঙ্গে দেশে ফিরবেন।
এছাড়া, খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকবেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা এনায়েতুল হক চৌধুরী এবং সহকারী ব্যক্তিগত সচিব মাসুদুর রহমান।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের দুই সদস্য কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক শাহাবউদ্দিন তালুকদার ও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ ডা. জাফর রবিবার লন্ডনে পৌঁছেছেন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে।
সোমবার হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা দেবেন। তাকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে থাকবেন তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপি মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, লন্ডন থেকে রবিবার রওনা হয়ে সোমবার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা থাকলেও পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার ভ্রমণ পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসে এবং একদিন পেছানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলের স্থায়ী কমিটির শীর্ষ নেতারা। সেখান থেকে খালেদা জিয়া যাবেন গুলশানে নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’য়।
দলীয় নেতাদের বরাতে জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে ফিরোজা পর্যন্ত রাস্তায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
এক যৌথ সভায় বিএনপি নেতারা কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, নেতাকর্মীরা যেন কোনোভাবেই রাস্তা বন্ধ না করেন বা বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তায় কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটান।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডনে পৌঁছেই লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন তিনি। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া ছেলে তারেক রহমানের বাসায় তাদের অধীনে চিকিৎসাধীন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা বাড়ে। মহামারি করোনার সময় আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দিয়ে বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দিলেও বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। তখন বিএনপির অভিযোগ ছিল খালেদা জিয়াকে সরকার গৃহবন্দি রেখেছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান খালেদা জিয়া। তারপরই চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তিনি।